পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्ञाङन९छ् সপতম পরিচ্ছেদ ঃ দগধ বাদশাহের জলভিক্ষা পরদিন পাকবাহুকালে চঞ্চলকুমারীর নিকট জেব-উন্নিসা বসিয়া প্ৰফল্লবদনে কথোপকথনে প্রবত্ত। দই দিনের রাত্ৰিজাগরণে শরীর মশলান—দশিচন্তার দীঘকাল ভোগে বিশীর্ণ। যে জেব-উন্নিসা রত্নরাশি, পািপরাশিতে মন্ডিত হইয়া সীসা মহলের দাপণে দাপণে আপনার প্রতিমাত্তি দেখিয়া হাসিত, এ সে জেব-উন্নিসা নহে। যে জানিত যে, বাদশাহজাদীর জন্ম কেবল ভোগবিলাসের জন্য, এ সে বাদশাহজাদী নহে। জেব-উন্নিসা বঝিয়াছে যে, বাদশাহজাদীও নারী, বাদশাহজাদীর হৃদয়ও নারীর হৃদয় ; স্নেহশান্য নারীহাদয়, জলশান্য নদী মাত্ৰ-কেবল বালকাময় অথবা জলশান্য তাড়াগের মত— কেবল পঙ্কময়। জেব-উন্নিসা এক্ষণে অকপটে গবর্ব পরিত্যাগ করিয়া, বিনীতভাবে চ৭8লকুমারীর নিকট গত রাত্রির ঘটনা সকল বিবত করিতেছিলেন। চঞ্চলকুমারী সকলই জানিতেন। সকল বলিয়া, জেব-উন্নিসা যন্ত করে চঞ্চলকুমারীকে বলিলেন, “মহারাণি! আমায় আর বন্দী রাখিয়া আপনার কি ফল? আমি যে আলমগীর বাদশাহের কন্যা, তাহা আমি ভুলিয়াছি। আপনি তাঁহার কাছে পাঠাইলেও আমার আর যাইতে ইচ্ছা নাই। গেলেও বোধ করি, আমার প্রাণরক্ষার সম্পভাবনা নাই। অতএব আমাকে ছাড়িয়া দিন, আমি আমার স্বামীর সঙ্গে তাঁহার সবদেশ তুকািসথানে চলিয়া যাই।” শনিয়া চঞ্চলকুমারী বলিলেন, “এ সকল কথার উত্তর দিবার সাধ্য আমার নাই। কত্তা মহারাণা সম্বয়ং। তিনি আপনাকে আমার কাছে রাখিতে পাঠাইয়াছেন, আমি আপনাকে রাখিতেছি। তবে এই যে ঘটনােটা ঘটিয়া গেল, ইহার জন্য মহারাণার সেনাপতি মাণিকলাল সিংহ দায়ী। আমি মাণিকল্যালের নিকট বিশেষ বাধিত, তাই তাঁহার কথায় এতটা করিয়াছি । কিন্তু ছাড়িয়া দিবার কোন উপদেশ পাই নাই। অতএব সে বিষয়ে কোন অঙ্গীকার করিতে পারিতেছি না।” জেব-উন্নিসা বিষগ্নভাবে বলিল, “মহারাণাকে আমার এ ভিক্ষা। আপনি কি জানাইতে পারেন না ? তাঁহার শিবির এমন অধিক দরে ত নহে! কাল রাত্ৰে পৰ্ব্ববতের উপর তাঁহার শিবিরের আলো দেখিতে পাইয়াছিলাম।” bᏄᏕ রী বলিলেন, “পাহাড় যত নিকট দেখায়, তত নিকট নয়। আমরা পাহাড়ে দেশে বাস করি, তাই জানি। আপনিও কাশমীর গিয়াছিলেন, এ কথা আপনার সমরণ হইতে পারে। তা যাই হোক লোক পাঠান কম্পটসাধ্য নহে। তবে, রাণা যে এ কথায় সম্পমতি হইবেন, এমন ভরসা। করি না। যদি এমন সম্পভব হইত যে, উদয়পরের ক্ষদ্র সেনা মোগল রাজ্য এই এক যন্ধে একেবারে ধবংস করিতে পারিত, যদি বাদশাহের সঙ্গে আমাদের আর সন্ধিস্থাপনের সম্পভাবনা না থাকিত, তবে অবশ্য তিনি আপনাকে স্বামীর সঙ্গে যাইতে অনািমতি দিতে পারিতেন। কিন্তু যখন সন্ধি অবশ্য এক দিন না এক দিন করিতে হইবে, তখন আপনাদিগকেও বাদশাহের নিকট অবশ্য ফেরৎ দিতে হইবে।” জেব। তাহা হইলে, আমাকে নিশ্চিত মাতৃত্যুমখে পাঠাইবেন। এ বিবাহের কথা জানিতে পারিলে, বাদশাহ আমাকে বিষভোজন করাইবেন। আর আমার স্বামীর ত কথাই নাই। তিনি আর কখনও দিল্লী যাইতে পাইবেন না। গেলে মহত্যু নিশ্চিত। এ বিবাহে কোন অভীষ্মট সিদ্ধ হইল, মহারাণি ? চঞ্চল। যাহাতে কোন উৎপাত না ঘটে, এমন উপায় করা যাইতে পারে, বোধ হয়। এইরপ কথোপকথন হইতেছিল, এমন সময়ে নিৰ্ম্মলকুমারী সেখানে কিছ, ব্যস্তভাবে আসিয়া উপস্থিত হইল। নিম্পমাল, চ৭৪লকে প্ৰণাম করার পর, জেব-উন্নিসাকে অভিবাদন করিলেন। জেব-উন্নিসাও তাঁহাকে প্রত্যভিবাদন করিলেন। তার পর চঞ্চল জিজ্ঞাসা করিলেন, “নিম্পমাল, এত ব্যস্তভাবে কেন ?” নিম্পমাল। বিশেষ সংবাদ আছে। তখন জেব-উনিসা উঠিয়া গেলেন। চণ8ল জিজ্ঞাসা করিলেন, “যাঁদ্ধের সংবাদ না কি ?” নিম্পমাল। আজ্ঞা হাঁ । O Գ OS