পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭১০

রাজসিংহ ভরসা যে, পিতা জিদা করিলে চঞ্চলকুমারী তাঁহার নিকটে আসিতে সম্মত হইতে পারে। পরওয়ানা পাইয়া বিক্রমসিংহ উত্তর লিখিল, “আমি শীঘ্ৰ দই হাজার অশবারোহী সেনা লইয়া আপনার হাজারে হাজির হইব ।” ঔরঙগজেব ভাবিলেন, “সেনা কেন ?” মনকে এই রােপ বৰ্ব্বাইলেন যে, তাঁহার সাহায্যাৰ্থ বিক্রমসিংহ সেনা লইয়া আসিতেছে । LDBDDB BBBzDS S0S DBDB DDDDDDDAe সৌন্দয্যের কি মহিমা! মবারক জেব-উন্নিসাকে দেখিয়া আবার সব ভুলিয়া গেল। গবিবর্ণিতা, স্নেহভাবন্দপেৰ্শ প্রফতুল্লা জেব-উন্নিসাকে দেখিলে আর তেমন হইত কি না, বলা যায় না, কিন্তু সেই জেব-উন্নিসা এখন বিনীতা, দীপশন্যা, স্নেহশালিনী, আশ্রময়ী। মবারকের পািব্বােনরোগ সম্পণেরপে ফিরিয়া আসিলা। দরিয়া, দরিয়ায় ভাসিয়া গেল। মনষ্যে সত্ৰীজাতির প্রেমে অন্ধ হইলে, আর তাহার হিতাহিত ধম্মাধৰ্ম্ম জ্ঞান থাকে না। তাহার মত বিশ্ববাসঘািতক, পাপিষ্ঠ আর নাই। সহস্র দীপের রশিম-প্রতিবিম্বসমন্বিত, উদয়সাগরের অন্ধকার জলের চতুঃপাশ্বে পববতমালা নিরীক্ষণ করিতে করিতে, পাটমান্ডপের দােগ মধ্যে ইন্দ্রভবন তুল্য কক্ষে বসিয়া মবারক জেব-উন্নিসার হােত, আপন হাতের ভিতর তুলিয়া লইল। মবারক বড় দঃখের সহিত বলিল, “তোমাকে আবার পাইয়াছি, কিন্তু দঃখ এই যে, এই সখি দশ দিন ভোগ করিতে পারিলাম না।” জেব-উন্নিসা। কেন ? কে বাধা দিবে ? বাদশাহ ? মবারক। সে সন্দেহও আছে। কিন্তু বাদশাহের কথা এখন বলিতেছি না। আমি কাল যন্ধে যাইব । যন্ধে মরণ জীবন দাই আছে। কিন্তু আমার পক্ষে মরণ নিশ্চয়। আমি রাজপােতদিগের যন্ধের যে সবন্দোবস্ত দেখিয়াছি, তাহাতে আমি নিশ্চিত জানি যে, পাৰ্ব্বত্য যন্ধে আমরা তাহাদিগকে পরাভব করিতে পারিব না। আমি একবাব হারিষা আসিয়াছি, আর একবার হারিষা আসিতে পারিব না। আমাকে যন্ধে মরিতে হইবে। জেব-উন্নিসা সজল নয়নে বলিল, “ঈশবর অবশ্য করিবেন যে তুমি যদুদ্ধে জয়ী হইয়া আসিবে। তুমি আমার কাছে না। আসিলে আমি মরিব।” উভয়ে চক্ষর জল ফেলিল। তখন মবারক ভাবিল, “মৗরব, না মবিব না ? “” অনেক ভাবিল। সম্মখে সেই নক্ষত্ৰখচিতগগনস্পশালী প<বতমালাপরিবেশুিটত অন্ধকার উদয়সাগরের জল—তাহাতে দীপমালাপ্রভাসিত পাট-নিৰ্ম্মিমতা মহানগরীর মনোমোহিনী ছায়া- --দারে। পৰ্ব্বতের চড়ার উপর চড়া।--তার উপর চড়া-বড় অন্ধকার । দই জনে বড় অন্ধকারই দেখিল। সহসা জেব-উন্নিসা বলিল, “এই অন্ধকারে, শিবিরের প্রাচীরের তলায়, কে ল্যুকাইল ? তোমার জন্য আমার মন সববিদ্যা শঙ্কিত ।” “দেখিয়া আসি,” বলিযা মবাইেবক ছটিয়া দাগ প্রাকারতলে গেলেন। দেখিলেন, একজন যথার্থই লাকাইয়া শইয়া আছে বটে। মবারক তাহাকে ধতি করিলেন। হােত ধরিয়া তুলিলেন। যে ল্যুকাইয়াছিল, সে দাঁড়াইয়। উঠিল। অন্ধকারে মবারক কিছল ঠাওর পাইলেন না। তাহাকে টানিয়া দগমধ্যে দীপালোকের নিকট আনিলেন। দেখিলেন যে, একটা সত্ৰীলোক। সে মাখে কাপড় দিয়া মািখ ঢাকিয়া রহিল—মখ খলিল না। মবারক তাহাকে একজন প্রতিহারীর জিম্মমায় রাখিয়া, স্বয়ং জেব-উন্নিসার নিকট গিয়া সবিস্তার নিবেদন করিলেন। জেব-উন্নিসা কৌতহ’ল- বশতঃ তাহাকে কক্ষমধ্যে আনিতে অনািমতি দিলেন। মবারক তাহাকে কক্ষমধ্যে লইয়া আসিলেন। জেব-উন্নিসা বলিল, “তুমি কে ? কেন লাকাইয়াছিলে ? মাখের কাপড় খোল।” সে সত্ৰীলোক তখন মাখের কাপড় খলিল। দই জনে সবিস্ময়ে দেখিল—দরিয়া বিবি। বড় সখের সময়ে, সহসা বিনা মেঘে সম্মখে বজপতন দেখিলে যেমন বিহবল হইতে হয়, জেব-উন্নিসা ও মবারক সেইরাপ হইল। তিন জনের কেহ কোন কথা কহিল না। কেয়কক্ষণ পরে দীর্ঘ নিশবাস ত্যাগ করিয়া মবারক বলিল, ”ইযা আল্লা । আমাকে মরিতেই יין | জেব-উন্নিসা তখন অতি কাতরকন্ঠে বলিল, “তবে আমাকেও।” GR OS)