পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

r রাজসিংহ গিয়া চিতোর ও আজমীরের মধ্যে সেনা সন্থাপন করিলেন। আবার আহারবন্ধের ভয় । অতএব খাঁ রহিলাকে বার হাজার ফৌজের সহিত সবলদাসের সঙ্গে যাদ্ধ করিতে পাঠাইয়া দিয়া ঔরঙ্গজেব স্বয়ং আজমীরে পলাযন করিলেন। আর কখনও উদয়পরমখ হইলেন না। সে সাধ তাঁহার জন্মের মত ফরাইল । এ দিকে সবলদাস, খাঁ রহিলাকে উত্তম মধ্যম দিয়া দরীকৃত করিলেন। পরাভূত হইয়া, খাঁ বহিলাও আজমীরে প্রস্থান করিলেন। দিগন্তরে রাজসিংহের দ্বিতীয় পত্র কুমার ভীমসিংহ গজরাট অঞ্চলে মোগলের অধিকারে প্রবেশ করিয়া সমস্ত নগর, গ্রাম, এমন কি, মোগল সবাদারের রাজধানীও লািঠাপাট করিলেন। অনেক স্থান অধিকার করিয়া সৌরাষ্ট্র পয্যন্ত রাজসিংহের অধিকার স্থাপন করিতেছিলেন, কিন্তু পীড়িত প্রজারা আসিয়া রাজসিংহকে জানাইল। কবণহৃদয় রাজসিংহ তাহাদিগেব দঃখে দাখিত হইয়া ভীমসিংহকে ফিরাইয়া আনিলেন। দযার অননুরোধে হিন্দসাম্রাজ্য পািনঃস্থাপিত করিলেন না। কিন্তু রাজমন্ত্ৰী দযাল সাহ সে প্রকৃতির লোক নহেন। তিনিও যন্ধে প্রবত্ত। মালবে মসলমানের সববনাশ করিতে লাগিলেন । ঔরঙ্গজেব হিন্দধমের উপর অনেক অত্যাচার কবিয়াছিল। প্রতিশোধের সবরপে ইনি কাজিদিগের মস্তক মন্ডন করিয়া বাঁধিষা রাখিতে লাগিলেন। কোরাণ দেখিলেই কুযায ফেলিযা দিতে লাগিলেন। দয়াল সাহ, কুমার জয়সিংহের সৈন্যের সঙ্গে আপনার সৈন্য মিলাইলে, তাঁহারা শাহজাদা আজিমকে পাকড়া করিয়া, চিতোবের নিকট যাদ্ধ করিলেন। আজিমও হতসৈন্য ও পরাজিত হাইফা পলায়ন করিলেন । চারি বৎসর ধরিয়া যাদ্ধ হইল। পদে পদে মোগলেবা পরাজিত হইল। শেষ ঔরঙগজেব সত্য সত্যই সন্ধি করিলেন । বাণ যাহা যাহা চাহিয়াছিলেন, ঔরঙগজেব সবই স্বীকার করিলেন । আবও কিছর বেশীও স্বীকাব করিতে হইল। মোগল এমন শিক্ষা আবে কখনও পায নাই। উপসংহার গ্রন্থকারের নিবেদন গ্রন্থকারের বিনীত নিবেদন এই যে, কোন পাঠক না মনে কবেন যে, হিন্দ মসলমানের কোন প্রকার তারতম্য নির্দেশ কৰা এই গ্রন্থের উদ্দেশ্য। হিন্দী হইলেই ভাল হয় না, মসলমান হইলেই মন্দ হয় না, অথবা হিন্দী হ ইলেই মন্দ হয় না, মসলমান হইলেই ভাল হয় না। ভাল মন্দ উভয়ের মধ্যে তুলার পেই আছে । ববং ইহাও স্বীকার করিতে হয় যে, যখন মসলমান এত শতাবদী ভারতবর্ষের প্রভু ছিল তখন রাজকীয় গণে মনুসলমান সমসাময়িক হিন্দীদিগের অপেক্ষা অবশ্য শ্রেশ্ৰষ্ঠ ছিল। কিন্তু ইস্ ও সত্য নহে যে, সকল মসলমান রাজা সকল হিন্দ, রাজা অপেক্ষা শ্রেশ্ৰষ্ঠ ছিলেন। অনেক স্থলে মাসলমানই হিন্দব অপেক্ষা রাজকীয় গণে শ্রোিঠ। অনেক স্থলে হিন্দ, রাজা মসলমান অপেক্ষা বাজকীয় গণে শ্রেশ্ৰষ্ঠ। অন্যান্য গণেব সহিত যাহার ধৰ্ম্ম আছে--হিন্দ হৌক, মসলমান হোক, সেই শ্রেণীঠ । অন্যান্য গণ থাকিতেও যাহার ধৰ্ম্মম নাই— হিন্দ হৌক, মসলমান হোক –সেই নিকৃষ্ট । ঔরঙ্গজেব ধৰ্ম্মমশিন্যে, তাই তাঁহার সময় হইতে মোগল সাম্রাজ্যের অধঃপতন আরম্ভ হইল। বাজসিংহ ধামিক, এজন্য তিনি ক্ষদ্র রাজ্যের অধিপতি হইয়া মোগল বাদশাহকে অপমানিত এবং পরাসত করিতে পারিয়াছিলেন । ইহাই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য। রাজা যেবাপ হয়েন, রাজানািচর এবং রাজপৌরজন প্রভৃতিও সেইরাপ হয়। উদিপরেী ও চঞ্চলকুমারীর তুলনার্য, জেব-উন্নিসা ও নিম্মলকুমারীর তুলনায়, মাণিকলাল ও মবারকের তুলনায় ইহা জানিতে পারা যায়। এই জন্য এ সকল কলপনা। ঔরঙগজেবের উত্তম ঐতিহাসিক তুলনার স্থল সোপনের দিবতীয় ফিলিপা। উভয়েই প্রকান্ড সাম্রাজ্যের অধিপতি ; উভয়েই ঐশীবযে, সেনাবলে, গৌরবে। আর সকল রাজগণের অপেক্ষা অনেক উচ্চ। উভয়ের শ্রমশীলতা, সতকাতা প্রভৃতি রাজকীয় গণে বিভূষিত ছিলেন। কিন্তু উভয়েই নিষ্ঠর, কপটাচারী, কুর, দাম্ভিক, আত্মমাত্ৰাহিতৈষী, এবং প্রজাপীড়ক। এজন্য উভয়ই আপন Գ Տ (3)