পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्न्बव्ली সেই পথে ইহাদিগের যাইবার পথ। সেই পাহাড়ের নিকট সিপাহীরা পৌছিলে দেখিল যে, পাহাড়ের নীচে একটা ঢিপির উপর একটি মানষে দাঁড়াইয়া আছে। চন্দ্ৰদীপত নীল আকাশে তাহার কালো শরীর চিত্রিত হইয়াছে দেখিয়া, হাওলাদার বলিল, “আরও এক শালা ঐ । উহাকে ধরিয়া আন । মোট বহিবে।” তখন এক জন সিপাহী তাহাকে ধরিতে গেল। সিপাহী ধরিতে যাইতেছে, সে ব্যক্তি স্থির দাঁড়াইয়া আছে—নড়ে না। সিপাহী তাহাকে ধরিল, সে কিছর বলিল না। ধরিয়া তাহাকে হাওলদারের নিকট আনিল, তখনও কিছ, বলিল না। হাওলদার বলিলেন, “উহার মাথায় মোট দাও।” সিপাহী তাহার মাথায় মোট দিল, সে মাথায় মোট লইল । তখন হাওলাদার পিছন ফিরিয়া, গাড়ির সঙ্গে চলিল। এই সময়ে হঠাৎ একটি পিস্তলের শবদ হইল, হাওলদার মস্তকে বিদ্ধ হইয়া ভূতলে পড়িয়া প্রাণত্যাগ করিল। “এই শালা হাওলদারকো মারা” বলিয়া এক জন সিপাহী মটিয়ার হাত ধরিল। মটিয়ার হাতে তখনও পিস্তল। মটিয়া মাথার মোট ফেলিয়া দিয়া, পিস্তল উলটাইয়া ধরিয়া সেই সিপাহীর মাথায় মারিল, সিপাহীর মাথা ভাঙ্গিয়া গেল, সে নিরস্ত হইল। সে সময়ে “হারি! হরি! হরি!” শব্দ করিয়া দাই শত শাস্ত্ৰধারী লোক আসিয়া সিপাহী দিগকে ঘিরিল । সিপাহীরা তখন সাহেবের আগমন প্রতীক্ষা করিতেছিল। সাহেবও ডাকাত পড়িয়াছে বিবেচনা করিয়া, সত্বর গাড়ির কাছে আসিয়া চতুন্ডেকাণ করিবার আজ্ঞা দিলেন। ইংরেজের নেশা বিপদের সময় থাকে না। তখনই সিপাহীরা চারি দিকে সম্মখে ফিরিয়া চতুন্ডেকাণ করিয়া দাঁড়াইল। অধ্যাক্ষের পনেকবার আজ্ঞা পাইয়া তাহারা বন্দক তুলিয়া ধরিল। এমন সময়ে হঠাৎ সাহেবের কোমর হইতে তাঁহার অসি কে কাড়িয়া লাইল । লইয়াই একাঘাতে তাঁহার মস্তকচ্ছেদন করিল। সাহেব ছিন্নশির হইয়া অশব হইতে পড়িয়া গেলে আর তাঁহার ফায়ারের হকুম দেওয়া হইল না। সকলে দেখিল যে, এক ব্যক্তি গাড়ির উপরে দাঁড়াইয়া তরবারি হস্তে 'হরি হরি’ শবদ করিতেছে এবং ‘সিপাহী মার, সিপাহী মার,” বলিতেছে। সে ভবানন্দ । সহসা অধ্যক্ষকে ছিন্নশিরা দেখিয়া এবং রক্ষার জন্য কাহারও নিকটে আজ্ঞা না পাইয়া সিপাহীরা কিয়ংক্ষিণ ভীত ও নিশ্চেন্ট হইল। এই অবসরে তেজস্বী দস্যরা তাহাদিগের অনেককে হত ও আহত করিয়া, গাড়ির নিকটে আসিয়া টাকার বাক্সসকল হস্তগত করিল। সিপাহীরা ভগেনাৎসাহ ও পরাভূত হইয়া পলায়নপর হইল। তখন যে বাপ্তি ঢিপির উপর দাঁড়াইয়াছিল, এবং শেষে যন্ধের প্রধান নেতৃত্ব গ্রহণ করিযাছিল, সে ভবানন্দের নিকট আসিল । উভয়ে তখন আলিঙ্গন করিলে ভবানন্দ বলিলেন, “ভাই জীবানন্দ, সার্থক ব্রত গ্রহণ করিয়াছিলো।” জীবানন্দ বলিল, “ভবানন্দ ! তোমার নাম সাৰ্থক হউক ।” অপহৃত ধন যথাস্থানে লইয়া যাইবার ব্যবস্থাকরণে জীবানন্দ নিযক্ত হইলেন, তাঁহার অন্য চরবগ সহিত শীঘ্রই তিনি সন্থানান্তরে গেলেন। ভবানন্দ একা দাঁড়িাইয়া রহিলেন । নবম পরিচ্ছেদ মহেন্দ্ৰ শকট হইতে নামিয়া এক জন সিপাহীর প্রহরণ কাড়িয়া লইয়া যন্ধে যোগ দিবার উদ্যোগী হইয়াছিলেন। কিন্তু এমন সময়ে তাহার সপন্টেই বোধ হইল যে, ইহারা দস্য; ধনাপহরণ জন্যই সিপাহীদিগকে আক্ৰমণ করিয়াছে। এই রােপ বিবেচনা করিয়া তিনি যাদ্ধস্থান হইতে সরিয়া গিয়া দাঁড়াইলেন। কেন না, দস্যদের সহায়তা করিলে তাহাদিগের দারাচারের ভাগী হইতে হইবে। তখন তিনি তরবারি ফেলিয়া দিয়া ধীরে ধীরে সে সন্থান ত্যাগ করিয়া যাইতেছিলেন, এমন সময়ে ভবানন্দ আসিয়া তাঁহার নিকটে দাঁড়াইল। মহেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিল, “মহাশয়, আপনি কে ?” ভবানন্দ বলিল, “তোমার তাতে প্রয়োজন কি ?” মহে। আমার কিছ. প্রয়োজন আছে। আজ আমি আপনার দ্বারা বিশেষ উপকৃত হইয়াছি। ভবা। সে বোধ যে তোমার আছে, এমন বঝিলাম না-অস্ত্ৰ হাতে করিয়া তফাৎ রহিলে— জমিদারের ছেলে, দধি-ঘির শ্রাদ্ধ করিতে মজবন্ত-কাজের বেলা হন মান! Գ Հ8 lir