उानकनभछे সেই শাকরনিবাস অগিনসংস্কৃত করিয়া নদীর জলে ফেলিয়া দিই। সেই বাবাইয়ের বাসা ভাঙ্গিয়া খড়-কুটা বাতাসে উড়াইয়া দিই। বল—হরে মর্যারে মধকৈটভারে।” তখন সেই কানন হইতে অতি ভীষণ নাদে সহস্ৰ সহস্র কন্ঠে একেবারে শবদ হইল, “হরে মর্যারে মধকৈটভারে।” সহস্র অসি একেবারে ঝনৎকার শব্দ করিল। সহস্র বল্লম ফলক সহিত উদ্ধের্ব উত্থিত হইল। সহস্র বাহর আস্ফোটে বজনিনাদ হইতে লাগিল। সহস্র ঢাল যোদ্ধবগের ককাশ পঠে তড়বড় শবদ করিতে লাগিল। মহাকোলাহলে পশ্যসকল ভীত হইয়া কানন হইতে পলাইল। পক্ষিসকল ভয়ে উচ্চ রব করিয়া গগনে উঠিয়া গগন আচ্ছন্ন করিল। সেই সময়ে শত শত জয়ঢাক্কা একেবারে নিনাদিত হইল। তখন “হরে মর্যারে মধকৈটভারে” বলিয়া কানন হইতে শ্রেণীবদ্ধ সন্তানের দল নিগত হইতে লাগিল। ধীর, গম্ভীর পদবিক্ষেণে মখে উচ্চৈঃস্বরে হরিনাম করিতে করিতে তাহারা সেই অন্ধকার রাত্রে নগরাভিমখে চলিল। বস্ত্রের মৰ্ম্মমরি শবদ, অস্ত্রের ঝনঝনা শবদ, কন্ঠের অসফট নিনাদ, মধ্যে মধ্যে তুমল রবে: হরিবোল। ধীরে, গম্ভীরে, সরোষে, সতেজে, সেই সন্তানবাহিনী নগরে আসিয়া নগর বিত্রসন্ত করিয়া ফেলিল। অকস্মাৎ এই বজাঘাত দেখিয়া নাগরিকেরা কে কোথায় পলাইল, তাহার ঠিকানা নাই। নগররক্ষীরা হতবন্ধি হইয়া নিশ্চেন্ট হইয়া রহিল। এদিকে সন্তানেরা প্রথমেই রাজকারাগারে গিয়া, কারাগার ভাঙিগয়া রক্ষিবগকে মারিয়া ফেলিল। এবং সত্যানন্দ মহেন্দ্রকে মক্ত করিয়া মস্তকে তুলিয়া নত্য আরম্ভ করিল। তখন অতিশয় হরিবোলের গোলযোগ পড়িয়া গেল। সত্যানন্দ মহেন্দুকে মক্ত করিয়াই, তাহারা যেখানে মসলমানের গহি দেখিল, আগন্ন ধরাইয়া দিল। তখন সত্যানন্দ বলিলেন, “ফিরিয়া চল, অনৰ্থক আনিস্টসাধনে প্রয়োজন নাই।” সন্তানদিগের এই সকল দৌরাত্ম্যের সংবাদ পাইয়া দেশের কর্তৃপক্ষগণ তাহাদিগের দমনাথ এক দল “পরগণা সিপাহী” পাঠাইলেন। তাহদের কেবল বন্দক ছিল, এমত নহে, একটা কামানও ছিল। সন্তানেরা তাহদের আগমন-সংবাদ পাইয়া আনন্দকানন হইতে নিগত হইয়া, যাদ্ধাৰ্থ অগ্রসর হইলেন। কিন্তু লাঠি-সড়ক বা বিশ পাঁচিশটা বন্দক কামানের কাছে কি করিবে ? সন্তানগণ পরাজিত হইয়া পলায়ন করিতে লাগিল। Գ8Ծ
পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
