পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

73ठ জগন্নাথক্ষেত্রের রাস্তায় গিয়া দাঁড়াইল । অলপকালেই সেই পথে এক দল সন্ন্যাসী দেখা দিল । শান্তি তাহদের সঙেগ মিশিল । তখন সন্ন্যাসীরা এখনকার সন্ন্যাসীদের মত ছিল না। তাহারা দলবদ্ধ, সশিক্ষিত, বলিষ্ঠ, যন্ধবিশারদ, এবং অন্যান্য গণে গণবান ছিল। তাহারা সচরাচর এক প্রকার রাজবিদ্রোহী— রাজার রাজস্ব লাটিয়া খাইত। বলিষ্ঠ বালক পাইলেই তাহারা অপহরণ করিত। তাহাদিগকে করিয়া আপনাদিগের সম্প্রদায়ভুক্ত করিত। এজন্য তাহাদিগকে ছেলেধরা V শান্তি বালকসন্ন্যাসিবেশে ইহাদের এক সম্প্রদায়মধ্যে মিশিল । তাহারা প্রথমে তাহার কোমলাঙ্গ দেখিয়া তাহাকে গ্রহণ করিতে ইচ্ছক ছিল না, কিন্তু শান্তির বদ্ধির প্রাখিয্য, চতুরতা এবং কম্পমদক্ষতা দেখিয়া আদর করিয়া দলে লইল । শান্তি তাহাদিগের দলে থাকিয়া ব্যায়াম করিত, অস্ত্রশিক্ষা করিত এবং পরিশ্রমসহিষ্ণ হইয়া উঠিল। তাহাদিগের সঙ্গে থাকিয়া অনেক দেশ-বিদেশ পৰ্যটন করিল, অনেক লড়াই দেখিল, এবং অনেক কাজ শিখিল। ক্ৰমশঃ তাহার যৌবনলক্ষণ দেখা দিল। অনেক সন্ন্যাসী জানিল যে, এ ছদ্মবেশিনী সত্ৰীলোক। কিন্তু সন্ন্যাসীরা সচরাচর জিতেন্দ্রিয় ; কেহ কোন কথা কহিল না। সন্ন্যাসীদিগের মধ্যে অনেকে পন্ডিত ছিল। শান্তি সংস্কৃতে কিছ ব্যুৎপত্তি লাভ করিয়াছে দেখিয়া, একজন পন্ডিত সন্ন্যাসী তাহাকে পড়াইতে লাগিলেন। সচরাচর সন্ন্যাসীরা জিতেন্দ্ৰিয় বলিয়াছি, কিন্তু সকলে নহে। এই পন্ডিতও নহেন। অথবা ইনি শান্তির অভিনব যৌবনবিকাশজনিত লাবণ্যে মগধ হইয়া ইন্দ্ৰিয় কর্তৃক পনববার নিপীড়িত হইতে লাগিলেন। শিষ্যাকে আদিরসাশ্ৰিত কাব্যসকল পড়াইতে আরম্ভ করলেন, আদিরসাশিত কবিতাগলির অশ্রাব্য ব্যাখ্যা শনাইতে লাগিলেন। তাহাতে শান্তির কিছর অপকার না হইয়া কিছর উপকার হইল। লতাজা কাহাকে বলে, শান্তি তাহা শিখে নাই; এখন সত্ৰীস্বভাবস্যুলভ লতাজা আসিয়া আপনি উপস্থিত হইল। পৌরষ চরিত্রের উপর নিম্পমাল সত্ৰীচরিত্রের অপব্ব প্রভা আসিয়া পড়িয়া, শান্তির গণগ্রাম উদ্ভাসিত করিতে লাগিল। শান্তি পড়া ছাড়িয়া দিল। ব্যাধ যেমন হরিণীর প্রতি ধাবমান হয়, শান্তির অধ্যাপক শান্তিকে দেখিলেই তাহার প্রতি সেইরােপ ধাবমান হইতে লাগিলেন। কিন্তু শান্তি ব্যায়ামাদির দ্বারা পরিষেরও দলভ বলসঞ্চয় করিয়াছিল, অধ্যাপক নিকটে আসিলেই তাঁহাকে কিল-ঘষার দ্বারা পজিত করিত—কিলঘষাগলি সহজ নহে। এক দিন সন্ন্যাসী ঠাকুর শান্তিকে নিজনে পাইয়া বড় জোর করিয়া শান্তির হাতখানা ধরিলেন, শান্তি ছাড়াইতে পারিল না। কিন্তু সন্ন্যাসীর দােভাগাক্ৰমে হাতখানা শান্তির বাঁ হাত; দাহিন হাতে শান্তি তাহার কপালে এমন জোরে ঘষা মারিল যে, সন্ন্যাসী মচ্ছিত হইয়া পড়িল। শান্তি সন্ন্যাসিসম্প্রদায় পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিল। নািত ভয়শন্যা। একাই সবদেশেব সন্ধানে যাত্রা করিল। সাহসের ও বাহবিলের প্রভাবে নিবিবাঘে চলিল। ভিক্ষা করিয়া অথবা বন্য ফলের দবারা উদর পোষণ করিতে করিতে, এবং অনেক মারামারিতে জয়ী হইয়া শবশরোলয়ে আসিয়া উপস্থিত হইল। দেখিল, শবেশীর সবগারোহণ ဖွံ့ဖြိုးပွား၊ কিন্তু শাশড়ী তাহাকে গহে স্থান দিলেন না,-জাতি যাইবে। শান্তি বাহির য়া গেল । জীবানন্দ বাড়ী ছিলেন। তিনি শান্তির অন্যবিত্তীর্ণ হইলেন। পথে শান্তিকে ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কেন আমার গহিত্যাগ করিয়া গিয়াছিলে ? এত দিন কোথায় ছিলে ?” শান্তি সকল সত্য বলিল। জীবানন্দ সত্য মিথ্যা চিনিতে পারিতেন। জীবানন্দ শান্তির কথায় বিশ্ববাস করিলেন। অপসরোগণের ভ্ৰবিলাসব্যক্তি কটাক্ষের জ্যোতি লইয়া অতি যত্নে নিশ্চিমত যে সম্মেমাহন শর, পশুপধন্বা তাহা পরিণীত দম্পতির প্রতি অপব্যয় করেন না। ইংরেজ পণিমার রাত্রে রাজপথে গ্যাস জবালে, বাঙ্গালী তেলা মাথায় তেল ঢালিয়া দেয়; মনষ্যের কথা দরে থােক, চন্দ্রদেব, সৰ্য্যেদেবের পরেও কখন কখন আকাশে উদিত থাকেন, ইন্দ্ৰ সাগরে বন্টি করেন; যে সিন্দকে টাকা ছাপাছাপি, কুবের সেই সিন্দকেই টাকা লইয়া যান; যম যার প্রায় সবগলিকেই গ্রহণ করিয়াছেন, তারই বাকিটিকে লইয়া যান। কেবল রতিপতির এমন নিববন্ধির কাজ দেখা যায় না। যেখানে গাঁটছড়া বাঁধা হইল—সেখানে আর পরিশ্রম করেন না, প্রজাপতির উপর Գ 8(է