পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कभ ब्रा5नाबब्ली সকল ভার দিয়া, যাহার হৃদয়শোণিত পান করিতে পারিবেন, তাহার সন্ধানে যান। কিন্তু আজ বোধ হয়। পল্পধন্বার কোন কাজ ছিল না—হঠাৎ দইটা ফলবাণ। অপব্যয় করিলেন। একটা আসিয়া জীবানন্দের হৃদয় ভেদ করিল-—আর একটা আসিয়া শান্তির ব্যকে পড়িয়া, প্রথম শান্তিকে জানাইল যে, সে বক মেয়েমানষের বক—বড় নরম জিনিস। নবমেঘনিম্পমািক্ত প্রথম জলকণানিষিক্ত পশুপকলিকার ন্যায়, শান্তি সহসা ফটিয়া উঠিয়া, উৎফল্লনয়নে জীবানন্দের মািখপানে চাহিল। জীবানন্দ বলিল, “আমি তোমাকে পরিত্যাগ করিব না। আমি যতক্ষণ না ফিরিয়া আসি, ততক্ষণ তুমি দাঁড়াইয়া থাক।” শান্তি বলিল, “তুমি ফিরিয়া আসিবে ত?” জীবানন্দ কিছ উত্তর না করিয়া, কোন দিক না চাহিয়া, সেই পথিপাশাব্যস্থ নারিকেলকুঞ্জের ছায়ায় শান্তির অধীরে অধর দিয়া সাধাপান করিলাম মনে করিয়া, প্ৰস্থান করিলেন । মাকে বঝাইয়া, জীবানন্দ মার কাছে বিদায় লইয়া আসিলেন। ভৈরবীপরে সম্প্রতি তাঁহার ভগিনী নিমাইয়ের বিবাহ হইয়াছিল। ভগিনীপতির সঙ্গে জীবানন্দের একটা সম্প্রীতি হইয়াছিল। জীবানন্দ শান্তিকে লইয়া সেইখানে গেলেন। ভগিনীপতি একটি ভূমি দিল। জীবানন্দ তাহার উপর এক কুটীর নিম্পমাণ করিলেন। তিনি শান্তিকে লইয়া সেইখানে সখে বাস করিতে লাগিলেন। সর্বামিসহবাসে শান্তির চরিত্রের পৌরষ দিন দিন বিলীন বা প্রচ্ছন্ন হইয়া আসিল। রমণীয় রমণীচরিত্রের নিত্য নবোন্মেষ হইতে লাগিল। সখীস্বপোেনর মত তাঁহাদের জীবন নিববাহিত হইত; কিন্তু সহসা সে সখীসবিপন্ন ভঙ্গ হইল। জীবানন্দ সত্যানন্দের হাতে পড়িয়া, সন্তানধৰ্ম্ম গ্রহণপৰিবাক, শান্তিকে পরিত্যাগ করিয়া গেলেন। পরিত্যাগের পর তাঁহাদের প্রথম সাক্ষাৎ নিমাইয়ের কৌশলে ঘটিল। তাহাই আমি পািকব পরিচ্ছেদে বণিত করিয়াছি। জীবানন্দ চলিয়া গেলে পর শান্তি নিমাইয়ের দাওয়ার উপর গিয়া বসিলা। নিমাই মেয়ে কোলে করিয়া তাহার নিকট আসিয়া বসিল । শান্তির চোখে আর জল নাই; শান্তি চোখ মছিয়াছে, মাখ প্রফতুল্ল করিয়াছে, একটা একটা হাসিতেছে। কিছ গম্ভীর, কিছ চিন্তাষন্তু, অন্যমনা। নিমাই বঝিয়া বলিল, “তব, ত দেখা হলো।” শান্তি কিছ উত্তর করিল না। চুপ করিয়া রহিল। নিমাই দেখিল, শান্তি মনের কথা কিছর বালিবে না। শান্তি মনের কথা বলিতে ভালবাসে না, তাহা নিমাই জানিত । সতরাং নিমাই চেস্টা করিয়া অন্য কথা পাড়িল—বলিল, “দেখ দেখি বউ, কেমন মেয়েটি।” শান্তি বলিল, “মেয়ে কোথা পেলি—তোর মেয়ে হলো কবে লো ?” নিমা। মরণ আর কি।--তুমি যমের বাড়ী যাও—এ যে দাদার মেয়ে। নিমাই শান্তিকে জবালাইবার জন্য এ কথাটা বলে নাই। “দাদার মেয়ে” অর্থাৎ দাদার কাছে যে মেয়েটি পাইয়াছি। শান্তি তাহা বঝিল না ; মনে করিল, নিমাই বঝি সচ ফটাইবার চেন্টা করিতেছে। অতএব শান্তি উত্তর করিল, “আমি মেয়ের বাপের কথা জিজ্ঞাসা করি নাই —মার কথাই জিজ্ঞাসা করিয়াছি।” নিমাই উচিত শাসিত পাইয়া অপ্রতিভ হইয়া বলিল, “কার মেয়ে কি জানি ভাই, দাদা কোথা থেকে কুড়িয়ে-মাড়িয়ে এনেছে, তা জিজ্ঞাসা করবার ত অবসর হলো না। তা এখন মন্বন্তরের দিন, কত লোক ছেলে-পিলে পথে-ঘাটে ফেলিয়া দিয়া যাইতেছে ; আমাদের কাছেই কত মেয়ে ছেলে বেচিতে আনিয়াছিল, তা পরের মেয়ে ছেলে কে আবার নেয় ?” ( আবার সেই চক্ষে সেইরাপ জল আসিল—নিমি চক্ষের জল মাছিয়া আবার বলিতে লাগিল) “মেয়েটি দিব্য সন্দির, নাদ সহ-নদাস চাঁদপােনা দেখে দাদার কাছে চেয়ে নিয়েছি।” তার পর শান্তি অনেকক্ষণ ধরিয়া নিমাইয়ের সঙ্গে নানাবিধ কথোপকথন করিল। পরে নিমাইয়ের স্বামী বাড়ী ফিরিয়া আসিল দেখিয়া শান্তি উঠিয়া আপনার কুটীরে গেল। কুটীরে গিয়া দবার রদ্ধ করিয়া উননের ভিতর হইতে কতকগালি ছাই বাহির করিয়া তুলিয়া রাখিল। C 8 V