পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

TATGFrfDo নাই। সেই যন্ধের ক্ষেত্রে, আমার সে প্রায়শ্চিত্ত করিতে হইবে। এ প্রাণ পরিত্যাগ করিতেই হইবে । আমার মরিবার দিন--” শান্তি আর বলিতে না দিয়া বলিল, “আমি তোমার ধৰ্ম্মপত্নী, সহধৰ্ম্মিণী, ধৰ্ম্মে সহায়। তুমি অতিশয় গরতের ধৰ্ম্মম গ্রহণ করিয়ােছ। সেই ধমের সহায়তার জন্যই আমি গহত্যাগ করিয়া আসিয়াছি। দই জন একত্র সেই ধৰ্ম্মাচরণ করিব বলিয়া গহত্যাগ করিয়া আসিয়া বনে বাস করিতেছি। তোমার ধম্মবাদিধ করিব। ধৰ্ম্মপত্নী হইয়া, তোমার ধমের বিঘা করিব কেন ? বিবাহ ইহকালের জন্য, এবং বিবাহ পরকালের জন্য। ইহকালের জন্য যে বিবাহ, মনে কর, তাহা আমাদের হয় নাই। আমাদের বিবাহ কেবল পরকালের জন্য। পরকালে দিবগণ ফল ফলিবে। কিন্তু প্ৰায়শ্চিত্তের কথা কেন ? তুমি কি পাপ করিয়াছ ? তোমার প্রতিজ্ঞা সত্ৰীলোকের সঙ্গে একাসনে বসিবে না। কৈ, কোন দিন ত একাসনে বসো নাই। প্রায়শ্চিত্ত কেন ? হায় প্ৰভু! তুমিই আমার গর, আমি কি তােমায় ধৰ্ম্ম শিখাইব ? তুমি বীর, আমি তােমায বীরৱত জীবানন্দ আহদে গদগদ হইয়া বলিলেন, “শিখাইলে ত!” শান্তি প্ৰফােল্লচিত্তে বলিতে লাগিল, “আরও দেখ গোঁসাই, ইহকালেই কি আমাদের বিবাহ নিলফল ? তুমি আমায় ভালবাস, আমি তোমায় ভালবাসি, ইহা অপেক্ষা ইহকালে আর কি গারতের ফল আছে ? বল “বন্দে মাতরম।” তখন দাই জনে গলা বন্দে মাতবম” চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ ভবানন্দ গোস্বামী একদা নগরে গিয়া উপস্থিত হইলেন। প্রশস্ত রাজপথ পরিত্যাগ করিয়া একটা অন্ধকার গলির ভিতর প্রবেশ করিলেন। গলির দই পাশে বা উচ্চ অট্টালিকাশ্রেণী; সােয্যদেব মধ্যাহেৰ এক একবার গলির ভিতর উকি মারেন মাত্র। তৎপরে অন্ধকারেরই অধিকার । গলির পাশের একটি দোতালা বাড়ীতে ভবানন্দ ঠাকুর প্রবেশ করিলেন। নিম্পনতলে একটি ঘরে যেখানে অদধ্যবয়স্ক একটি স্ত্রীলোক পাক করিতেছিল, সেইখানে গিয়া ভবানন্দ মহাপ্ৰভু দশন দিলেন। সত্ৰীলোকটি অন্ধ বয়স্কা, মোটা সোটা, কালো কোলো, ঠোঁটি পরা, কপালে উলিঙ্ক, সীমান্তপ্রদেশে কেশদাম চড়াকারে শোভা পাইতেছে। ঠান-ঠন করিয়া হাঁড়ির কানায় ভাতের কাটি বাজিতেছে, ফর-ফর করিয়া অলীকদমের কেশগচ্ছ উড়িতেছে, গল-গলা করিয়া মাগী আপনা। আপনি বকিতেছে, আর তার মখভঙ্গীতে তাহার মাথার চড়ার নানা প্রকার টলনি টালনির বিকাশ হইতেছে। এমন সময় ভবানন্দ মহাপ্ৰভু গহমধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিলেন, “ঠাকরণ দিদি, প্ৰাতঃপ্ৰণাম!” ঠাকরণ দিদি ভবানন্দকে দেখিয়া শশব্যস্ত বস্ত্ৰাদি সামলাইতে লাগিলেন। মস্তকের মোহন চড়া খালিয়া ফেলিবেন ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সংবিধা হইল না; কেন না, সকড়ি হাত। নিষেকমন্সণ সেই চিকুরজাল—হায়! তাহতে পাজার সময় একটি বকফােল পড়িয়াছিল!—বস্ত্ৰাঞ্চলে ঢাকিতে যত্ন করিলেন ; বস্ত্ৰাঞ্চল তােহা ঢাকিতে সক্ষম হইল না; কেন না, ঠাকুরাণটি একখানি পাঁচ হাত কাপড় পরিয়াছিলেন। সেই পাঁচ হােত কাপড় প্রথমে গরিভারপ্রণত উদরপ্রদেশ বেস্টন করিয়া আসিতে প্রায় নিঃশেষ হইয়া পড়িয়াছিল, তার পর দঃসহ ভারগ্রস্ত হৃদয়মন্ডলেরও কিছ. আবর পদার্তা রক্ষা করিতে হইয়াছে। শেষে ঘাড়ে পৌছয়া বস্ত্ৰাণ8ল জবাব দিল। কাণের উপর উঠিয়া বলিল, আর যাইতে পারি না। অগত্যা পরমব্রীড়াবতী গৌরী ঠাকুরাণী কথিত বস্ত্ৰাণগুলকে কাণের কাছে ধরিয়া রাখিলেন। এবং ভবিষ্যতে আট হােত কাপড় কিনিবার জন্য মনে মনে দািঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়া বললেন, “কে, গোঁসাই ঠাকুর ? এস এস ! আমায় আবার প্রাতঃপ্ৰণাম কেন ভাই ?” ভব। তুমি ঠানদিদি যে ! গৌরী। আদর ক'রে বল বলিয়া। তোমরা হলে গোঁসাই মানষ, দেবতা ! তা করেছ। করেছ, বেচে থােক। তা করিলেও করিতে পাের, হাজার হোক আমি বয়সে বড়। এখন ভবানন্দের অপেক্ষা গৌরী দেবী মহাশয়া বছর পাঁচিশের বড়, কিন্তু সচতুর ভবানন্দ ○ り な