পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बध्दझ ज्ञान्नावब्जौ অপেক্ষা আমার কাছে আমার স্বামীর ধৰ্ম্ম বড়। আমার ধৰ্ম্মে আমার যে দিন ইচ্ছা জলাঞ্জলি দিতে পারি ; আমার স্বামীর ধমে জলাঞ্জলি দিব ? মহারাজ! তোমার কথায় আমার স্বামী মরিতে হয় মরিবেন, আমি বারণ করিব না।” ব্ৰহ্মচারী। তখন দীঘ নিশবাস ত্যাগ করিয়া বলিলেন, “মা, এ ঘোর ব্লতে বলিদান আছে { আমাদের সকলকেই বলি পড়িতে হইবে। আমি মরিবি, জীবানন্দ, ভবানন্দ, সবাই মরিবে, বোধ হয় মা, তুমিও মরিবে; কিন্তু দেখ, কাজ করিয়া মরিতে হইবে, বিনা কায্যে কি মারা ভাল ?— আমি কেবল দেশকে মা বলিয়াছি, আর কাহাকেও মা বলি নাই; কেন না, সেই সজলা সফল ধরণী ভিন্ন আমরা অনন্যমাতৃক। আর তোমাকে মা বলিলাম, তুমি মা হইয়া সন্তানের কাজ কর, যাহাতে কায্যোদ্ধার হয়, তাহা করিও, জীবানন্দের প্রাণরক্ষা করিও, তোমার প্রাণরক্ষা করিও ।” এই বলিয়া সত্যানন্দ “হরে মর্যারে মধকৈটভারে” গায়িতে গায়িতে নিম্প্রকান্ত হইলেন। অভটম পরিচ্ছেদ ক্ৰমে সন্তানসম্প্রদােয়মধ্যে সংবাদ প্রচারিত হইল যে, সত্যানন্দ আসিয়াছেন, সন্তানদিগের সঙ্গে কি কথা কহিবেন, এই বলিয়া তিনি সকলকে আহবান করিয়াছেন। তখন দলে দলে সন্তানসম্প্রদােয় নদীতীরে অসিয়া সমবেত হইতে লাগিল । জ্যোৎসনারাত্ৰিতে নদীসৈকতপাশেব বহিৎ কানানমধ্যে আম, পনস, তাল, তিন্তিড়ী, অশবথ, বেল, বট, শালমলী প্রভৃতি বাক্ষান্দিরঞ্জিত মহাগহনে দশ সহস্ৰ সন্তান সমবেত হইল। তখন সকলেই পরস্পরের মখে সত্যানন্দের আগমনবাত্তা শ্রবণ করিয়া মহা কোলাহলধবনি করিতে লাগিল। সত্যানন্দ কি জন্য কোথায় গি । তাহা সাধারণে জানিত না। প্রবাদ এই যে, তিনি সন্তানদিগের মঙ্গলকামনায় তপস্যার্থ প্রস্থান করিয়াছিলেন। আজ সকলে কণাকণি করিতে লাগিল, “মহারাজের তপঃসিদ্ধি হইয়াছে —আমাদের রাজ্য হইবে।” তখন বড় কোলাহল হইতে লাগিল। কেহ চীৎকার করিতে লাগিল, “মার, মার, নেড়ে মার।” কেহ বলিল, “জয় জয়! মহারাজাকি জয় ।” কেহ গায়িল, “হরে মর্যারে মধকৈটভারে!” কেহ গায়িল, “বন্দে মাতরম!” কেহ বলে—“ভাই, এমন দিন কি হইবে, তুচ্ছ বাঙ্গালি হইয়া রণক্ষেত্রে এ শরীর পাত করিব ? কেহ বলে, “ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙিগয়া রাধামাধবের মন্দির গড়িব ? কেহ বলে, “ভাই, এমন দিন কি হইবে, আপনার ধন আপনি খাইব ?” দশ সহস্র নরকন্ঠের কল-কল রব, মধর বায় সন্তাড়িত বােক্ষপত্ররাশির মৰ্ম্মমরি, সৈকতবাহিনী তরঙ্গিণীর মদ মদ, তার তার রব, নীল আকাশে চন্দ্র, তারা, শ্বেত মেঘরাশি, শ্যামল ধরণীতলে হরিৎ কানন, স্বচ্ছ নদী, শেবত সৈকত, ফতুল্ল কুসমদাম। আর মধ্যে মধ্যে সেই সবব জনমনোরম “বন্দে মাতরম!” সত্যানন্দ আসিয়া সেই সমবেত সন্তানমন্ডলীর মধ্যে দাঁড়াইলেন। তখন সেই দশ সহস্ৰ সন্তানমস্তক বক্ষবিচ্ছেদপতিত চন্দ্রকিরণে প্রভাসিত হইয়া শ্যামল তৃণভূমে প্রণত হইল। অতি উচ্চস্বরে আশ্রমপর্ণলোচনে উভয় বাহ উদ্ধের উত্তোলন করিয়া সত্যানন্দ বলিলেন, “শঙখচক্ৰগদাপদ্মধারী বনমালী, বৈকুন্ঠনাথ, যিনি কেশিমথন, মধােমরনরকমদািন, লোকপালন, তিনি তোমাদের মঙ্গল করন, তিনি তোমাদের বাহতে বল দিন, মনে ভক্তি দিন, ধৰ্ম্মেম মতি দিন, তোমরা একবার তাঁহার মহিমা গীত কর।” তখন সেই সহস্র কন্ঠে উচ্চৈঃস্বরে গীত হইতে লাগিল--- “জয় জগদীশ হরে । প্রলয়পধোধিজলে ধাতবানসি বেদম বিহিতবাহিত্ৰচরিত্রমখেদম কেশব ধতেমীনশরীর জয় জগদীশ হরে ৷ ” সত্যানন্দ তাহাদিগকে পােনরায় আশীৰ্ব্ববাদ করিয়া বলিলেন, “হে সন্তানগণ, তোমাদের সঙ্গে আজ আমার বিশেষ কথা আছে। টমাস নামা এক জন বিধৰ্ম্মমী দারাত্মা বহতর সন্তান নন্ট করিয়াছে। আজ রাত্রে আমরা তাহাকে সসৈন্যে বধ করিব। জগদীশবারের আজ্ঞা—তোমরা কি বল ?” Գ (Ն Ե`