পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৭৩

ब७दक ब्रष्न्बव्ी তখন সেই অলপসংখ্যক সন্তানগণ কাপেতন টমাসকে ঘোড়ায় বধিয়া লইয়া “বন্দে মাতরম" গায়িতে গায়িতে লেপেটেনাণ্ট ওয়াটসনকে লক্ষ্য করিয়া ছটিল। জীবানন্দের সন্তানসেনা ভগেনাদ্যম, তাহারা পলায়নে উদ্যত । জীবানন্দ ও ধীর।ানন্দ, তাহাদিগকে বঝাইয়া সংযত রাখিলেন, কিন্তু সকলকে পারিলেন না, কতকগালি পলাইয়া আমকাননে আশ্রয় লইল । অবশিস্ট সেনা জীবানন্দ ও ধীর নন্দ পালের মখে লইয়া গেলেন। কিন্তু সেইখানে হে ও ওয়াটসন তাহাদিগকে দই দিক হইতে ঘিরিল। আর রক্ষা নাই। একাদশ পরিচ্ছেদ এই সময়ে টমাসের তোপগলি দক্ষিণে আসিয়া পৌছিল। তখন সন্তানের দল একেবারে ছিন্নভিন্ন হইল, কেহ বাঁচিবার আর কোন আশা রহিল না। সন্তানেরা যে যেখানে পাইল, পলাইতে লাগিল। জীবানন্দ ধীর।ানন্দ তাহাদিগকে সংযত এবং একত্ৰিত করিবার জন্য অনেক চেন্টা করিলেন। কিন্তু কিছতেই পারিলেন না। সেই সময় উচ্চৈঃশব্দ হইল, ‘পলে যাও, পালে যাও ! ও পারে যাও । নহিলে নদীতে ডুবিয়া মরিবে, ধীরে ধীরে ইংরেজসেনার দিকে মািখ রাখিয়া পালে যাও।” জীবানন্দ চাহিয়া দেখিলেন, সম্মখে ভবানন্দ । ভবানন্দ বলিলেন, “জীবানন্দ, পালে লইয়া যাও, রক্ষা নাই ।” তখন ধীরে ধীরে পিছে হঠিতে হঠিতে সন্তানসেনা পালের পারে। চলিল। কিন্তু পল পাইয়া বহিসংখ্যক সন্তান একেবারে পলের ভিতর প্রবেশ করায় ইংরেজের তোপ সযোগ পাইল । পল একেবারে ঝাঁটাইতে লাগিল। সন্তানের দল বিনম্ৰাট হইতে লাগিল। ভবানন্দ জীবানন্দ ধীর নিন্দ একত্র । একটা তোপের দৌরাত্ম্যে ভয়ানক সন্তানক্ষয় হইতেছিল। ভবানন্দ বলিলেন, “জীবানন্দ, ধীর।ানন্দ, এস—তরবারি ঘরাইয়া আমরা তিন জন এই তোেপটা দখল করি।” তখন তিন জনে তরবারি ঘরাইয়া সেই তোপের নিকটবত্তীর্ণ গোলন্দাজ সেনা বধ করিলেন। তখন আর আর সন্তানগণ তাহদের সাহায্যে আসিল । তোপটা ভবানন্দের দখল হইল। তোপ দখল করিয়া ভবানন্দ তাহার উপর উঠিয়া দাঁড়াইলেন। করতালি দিয়া বলিলেন, “বল বন্দে মাতরম।” সকলে গায়িল, “বন্দে মাতরম।” ভবানন্দ বলিলেন, “জীবানন্দ, এই তোপ ঘরাইয়া বেটাদের লাচির ময়দা তৈয়ার করি।” সন্তানেরা সকলে ধরিয়া তোপ ঘরাইল। তখন তোপ উচ্চনাদে বৈষ্ণবের কণে যেন হরি হরি শব্দে ডাকিতে লাগিল। বহতর সিপাহী তাহাতে মরিতে লাগিল। ভবানন্দ সেই তোেপ টানিয়া আনিয়া পালের মখে সস্থাপন করিয়া বলিলেন, “তোমরা দাই জনে সন্তানসেনা সারি দিয়া পল পার করিয়া লইয়া যাও, আমি একা এই ব্যুহমখ রক্ষা করিব—তোপ চালাইবার জন্য আমার কাছে জন কয় গোলন্দাজ দিয়া যাও।” কুড়ি জন বাছা বাছা সন্তান ভবানন্দের কাছে রহিল। তখন অসংখ্য সন্তান পল পার হইয়া জীবানন্দ ও ধীর।ানন্দের আজ্ঞাক্ৰমে সারি দিয়া পরপারে যাইতে লাগিল। একা ভবানন্দ কুড়ি জন সন্তানের সাহায্যে সেই এক কামানে বহন্তর সেনা নিহত করিতে লাগিলেন—কিন্তু যবন সেনা জলোচ্ছৰাসোখিত তরঙ্গের ন্যায়! তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, তরঙ্গের উপব তরঙগ!—ভবানন্দকে সংবেশুিটত, উৎপীড়িত, নিমপোিনর ন্যায় করিয়া তুলিল। ভবানন্দ আশ্রান্ত, অজেয়, নিভীক—কামানের শব্দে শব্দে কতই সেনা বিনম্ৰাট করিতে লাগিলেনু যবন বাত্যাপীড়িত তরঙ্গাভিঘাতের ন্যায়। তাঁহার উপর আক্ৰমণ করিতে লাগিল, কিন্তু কুড়ি জন সন্তান, তোপ লইয়া পালের মািখ বন্ধ করিয়া রহিল। তাহারা মরিয়াও মরে না —যবন পালে ঢাকিতে পায় না। সে বীরেরা অজেয়, সে জীবন অবিনশবির। অবসর পাইয়া দলে দলে সন্তানসেনা অপর পারে গেল। আর কিছকাল পল রক্ষা করিতে পারিলেই সন্তানেরা সকলেই পড়লের পারে যায়ু—এমন সময় কোথা হইতে নািতন তোেপ ডাকিল—“গড়,মা, গড়ম বােম বমি।” উভয় দল কিয়াৎক্ষণ যন্দ্ধে ক্ষান্ত হইয়া চাহিয়া দেখিল—কোথায় আবার কােমান! দেখিল, বনের ভিতর হইতে কতকগলি কামান দেশী গোলন্দাজ কর্তৃক চালিত হইয়া নিগত হইতেছে। নির্গত হইয়া সেই বিরাট কামানের শ্রেণী সপ্তদশ মুখে ধর্ম উদগীৰ্ণ করিয়া হে সাহেবের দলের উপর অগ্নিবনিটি করিল। ঘোর শব্দে বন নন্দ গিরি সকলই প্রতিধ্বনিত হইল। সমস্ত দিনের রণে ক্লান্ত যবন সেনা প্রাণভয়ে শিহরিল। অনিবন্টিতে তৈলঙ্গী, মসলমান, ܓ dܘ ܘ