পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দগেশনন্দিনী কন্ঠস্বর শানিলে কিছ, সাহস হয়, শনিতে ইচ্ছাও করে। এই জন্য বিমলা গজপতিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “রসিকরতন! কি ভাবিতেছ?” রসিকরতন বলিলেন, “বলি তৈজসপত্রগলা!” বিমলা উত্তর না দিয়া, মাখে কাপড় দিয়া হাসিতে লাগিলেন। ক্ষণেক কাল পাবে, বিমলা আবার কথা কহিলেন, “দিগগজ, তুমি ভূতের ভয় করা ?” "রাম! রাম! রাম! রামনাম বল” বলিয়া দিগগজ বিমলার পশ্চাতে দই হাত সরিয়া আসিলেন। একে পায়, আরো চায়। বিমলা কহিলেন, "এ পথে বড় ভূতের দৌরাত্ম্য।“ দিগগজ আসিয়া বিমলার অঞ্চলে ধরিলেন। বিমলা বলিতে লাগিলেন, “আমরা সেদিন শৈলেশ্ববরের পজা দিয়া আসিতেছিলাম, পথের মধ্যে বটতলায় দেখি যে এক বিকটাকার মাত্তি!" অঞ্চলের তাড়নায় বিমলা জানিতে পারিলেন যে, ব্রাহ্মণ থরহরি কাঁপিতেছে ; বঝিলেন যে, আর অধিক বাড়াবাড়ি করিলে ব্রাহ্মণের গতিশক্তি রহিত হইবে। অতএব ক্ষান্ত হইয়া কহিলেন, “রসিকরাজ ! তুমি গাইতে জান ?” রসিক পরিষ কে কোথায় সঙ্গীতে অপট ? দিগগজ বলিলেন, “জানি বৈ কি।” বিমলা কালিলেন, “একটি গীত গাও দেখি!” দিগগজ আরম্ভ করিলেন, “এ হম-উ হািমসই, কি ক্ষণে দেখিলাম শ্যামে কদম্পেইেবরি ডালে। “ পথের ধারে একটা গাভী শয়ন করিয়া রোমন্থন করিতেছিল, অলৌকিক শবদ শনিয়া বেগে পলায়ন করিল। রাসিকের গীত চলিতে লাগিল । “সেই দিন পড়িল কপাল মোর— কালি দিলাম। কুলে। মাথায় চড়া, হাতে বাঁশী কথা কয় হাসি হাসি ; বলে, ও গোয়ালা মাসী-কলসী দিব ফেলে।” দিগগজের আর গান হইল না; হঠাৎ তাঁহার শ্রবণেন্দ্রিয় একবারে মগধ হইয়া গেল ; অমািতময়, মানসোন্মাদকর, অপসরাহস্তস্থিত বীণা শব্দবৎ মধর সঙ্গীতধবনি তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল। বিমলা নিজে পািণ স্বরে সওগীত আরম্ভ করিয়াছিলেন। নিস্তবধ প্রান্তরমধ্যে নৈশ গগন ব্যাপিয়া সেই সপত্তস্বরপরিপােশ ধবনি উঠিতে লাগিল। শীতল নৈদাঘ, পবনে ধবনি আরোহণ করিয়া চলিল । দিগগজ নিশবাস রহিত করিয়া শনিতে লাগিলেন। যখন বিমলা সমাপত করিলেন, তখন গজপতি কহিলেন, “আবীর” । বি। আবার কি ? দি। আবার একটি গাও । द । तीक फार्गशद 2 দি। একটি বাঙলা গাও । “গায়িতেছি।" বলিয়া বিমলা পনেকবার সঙ্গীত আরম্ভ করিলেন। , গীত গায়িতে গায়িতে বিমলা জানিতে পারিলেন যে তাঁহার অঞ্চলে বিষম টান পড়িয়াছে; পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখিলেন, গজপতি একেবারে তাঁহার গায়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছেন, প্রাণপণে তাঁহার অঞ্চল ধরিয়াছেন। বিমলা বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিলেন, “কি হইয়াছে ? আবার ভূত না কি ?” ব্ৰাহ্মণের বাক্য সরে না, কেবল অঙ্গলি নিন্দেশ করিয়া দেখাইলেন, “ঐ ।” বিমলা নিস্তবধ হইয়া সেই দিকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। ঘন ঘন প্রবল নিশবাসশব্দ তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল, এবং নিন্দিভট দিকে পথপাশেব একটা পদাৰ্থ দেখিতে পাইলেন। সাহসে নিভাির করিয়া নিকটে গিয়া বিমলা দেখিলেন, একটি সংগঠন সমসক্তজীভূত অশব মাতু্যযাতনায় পড়িয়া নিশবাস ত্যাগ করিতেছে। বিমলা পথ বাহন করিতে লাগিলেন। সমসত্মজীভুত সৈনিক-আশােব পথিমধ্যে মমষ অবস্থায় CAC