পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮১৩

ब७कब ब्रष्न्बव्ी কথা কখন কখন শনিতে পায়, কখন কোন কথা শনিতে পায় না। এ রকম হইলে বড় গন্ডগোল বাধে । যে কাছে থাকিবার জন্য আসিয়াছিল, সে সক্ষপণেরপে ভিন্নপ্রকৃতির স্ত্রীলোক। বয়সে প্ৰফীল্লের অপেক্ষা পাঁচ সাত বৎসরের বড় হইবে—উত্তজবল শ্যামবর্ণ—বষাকালের কাঁচ পাতার মত রঙ। রােপ উছলিয়া পড়িতেছে। দই জনে একত্র আসিল—যেন পণিমা অমাবস্যার হাত ধরিয়াছে। গোবরার মা প্রফতুল্লকে প্ৰণাম করিল। প্ৰফল্প জিজ্ঞাসা করিল, “তোমার নাম কি গা ?” গোবরার মা শনিতে পাইল না; অপরা বলিল, “ও একটা কালা—ওকে সবাই গোবরার মা বলে ?” প্রা। গোবরার মা ! তোমার কয়টি ছেলে গা ? গোবরার মা। আমি ছিলেম আর কোথায় ? বাড়ীতে ছিলেম। প্রা। তুমি কি জেতের মেয়ে ? গোবরার মা। যেতে আসতে খাব পারব। যেখানে বলবে, সেইখানেই যাব। প্রা। বলি, তুমি কি লোক ? গোবরার মা। আর তোমার লোকে কাজ কি মা ! আমি একাই তোমার সব কাজ ক’রে দেব। কেবল দলই একটা কাজ পারব না। প্রা। পারবে না, কি ? গোবরার মার কাণ ফাটিল। বলিল, “পারব না, কি ? এই জল তুলতে পারব না। আমার কাঁকালে জোর নাই। আর কাপড়-চোপড় কাচা—তা না হয় মা, তুমিই ক'রো।” প্রা। আর সব পারবে তা ? গো-মা। বাসনটােসনগালো মাজা—তাও না হয় তুমি আপনিই করলে। প্রা। তাও পারবে না; তবে পারবে কি ? গো-মা । আর এমন কিছল না—এই ঘর ঝোঁটোন, ঘর নিকোন, এটাও বড় পারি। নে । প্রা। পারবে কি ? গো-মা। আর যা বল। সলতে পাকাব্য, জল গাড়িয়ে দেব, আমাব এটো পাতা ফেলবো, --আর আসল কােজ যা যা, তা করব।--হাট করব। প্রা। বেসাতির হিসাবটা দিতে পারবে ? গো-মা। তা মা, আমি বড়ো মানষে, হালা কালা, আমি কি অত পারি। তবে কড়িপাতি যা দেবে, তা সব খরচ করে আসব—তুমি বলতে পাবে না যে, আমার এই খরচটা হলো না । প্রা। বাছা, তোমার মত গণের লোক পাওয়া ভার। গো-মা। তা মা, যা বল, তোমার আপনার গণে বল। প্ৰফল্লি অপরাকে তখন বলিল, “তোমার নাম কি গা ?” নবাগত সন্দরী বলিল, “তা ভাই, জানি না।” প্ৰফল্লি হাসিয়া বলিল, “সে কি : বাপ-মায় কি নাম রাখে নাই ?” সন্দরী বলিল, “রাখাই সম্পভব। কিন্তু আমি সবিশেষ অবগত নাহি ।” প্রা। সে কি গো ? সন্দেরী। জ্ঞান হইবার আগে হইতে আমি বাপ-মার কাছছাড়া। ছেলেবেলায় আমায় ছেলেধরায় চুরি করিয়া লইযা গিয়াছিল। প্রা। বটে। তা তারাও ত একটা নাম রেখেছিল ? সন্দেরী । নানা রকম। 마 প্রা। কি কি ? সন্দেরী। পোড়ারমখী, লক্ষীছাড়ী, হতভাগী, চুলোমাখী। এতক্ষণ গোবরার মা আবার কােণ হারাইয়াছিল। এই কয়টা সদাশ্রিত গণবাচক শব্দে শ্রীতি জাগরিত হইল। সে বলিল, “যে আমায় পোড়ারমখী বলে, সেই পোড়ারমখী, যে আমার চুলেমখেী বলে, সেই চুলোমমুখী, যে আমায় অর্টিকুড়ী বলে, সেই অটকুড়ী”— げ> ミ