পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী বয়স্যা বলিল, “ভবানী ঠাকুর নাম রাখিয়াছেন নিশি, আমি দিবার বহিন নিশি। দিবাকে এক দিন আলাপ করিতে লইয়া আসিব। কিন্তু যা বলিতেছিলাম, শোন। ঈশবরই পরমস্বামী। সত্ৰীলোকের পতিই দেবতা, শ্ৰীকৃষ্ণ সকলের দেবতা। দটাে দেবতা কেন, ভাই ? দই ঈশবর ? এ ক্ষদ্র প্রাণের ক্ষদ্র ভক্তিটকুকে দই ভাগ করিলে কতটকু থাকে ?” প্রা। দর! মেয়েমানষের ভক্তির কি শেষ আছে ? নিশি। মেয়েমানষের ভালবাসার শেষ নাই। ভক্তি এক, ভালবাসা আর । প্রা। আমি তা আজও জানিতে পারি নাই। আমার দই নােতন । প্ৰফীল্লের চক্ষা দিযা ঝর-ঝর করিয়া জল পড়িতে লাগিল। নিশি বলিল, “বঝিয়াছি বোন —তুমি অনেক দঃখ পাইয়ােছ।” তখন নিশি প্রফল্পের গলা জড়াইয়া ধরিয়া তার চক্ষের জল মছাইল। বলিল, “এত জানিতাম না।” নিশি তখন বঝিল, ঈশবর-ভক্তির প্রথম সোপান পতি-ভক্তি । bङ्माश्वि °बि८ष्छ्न যে রাত্রে দলােভ চক্লবতীর্ণ প্রফক্সকে তাহার মাতার বাড়ী হইতে ধরিয়া লইয়া যায়, দৈবগতিকে ব্রজেশবের সেই রাত্রেই প্রফল্পের বাসস্থান দােগ পরে গিয়া উপস্থিত হইয়াছিলেন। ব্রজেশবরের একটি ঘোড়া ছিল, ঘোড়ায় চড়িতে ব্রজেশবের খািব মজাবত। যখন বাড়ীর সকলে ঘামাইল, ব্রজেশবের গোপনে সেই অশবপঠে আরোহণ করিয়া অন্ধকারে দােগাপারে প্রস্থান করিলেন। যখন তিনি প্রফল্পের কুটীরে উপস্থিত হইলেন, তখন সে ভবন জনশন্যে অন্ধকারময়। প্রফােল্লকে দস্যুতে লইয়া গিয়াছে। সেই রাত্রে ব্ৰঞ্জের্শবর পাড়াপাড়শী কাহাকেও পাইলেন না যে, জিজ্ঞাসা করেন । ব্ৰজেশবর প্রফােল্লকে না দেখিতে পাইয়া মনে করিল যে, প্রফতুল্ল একা থাকিতে না পারিয়া কোন কুটম্ববাড়ী গিয়াছে! ব্রজেশবের অপেক্ষা করিতে পারিল না। বাপের ভয়, রাত্রিমধ্যেই ফিরিয়া আসিল । তার পর কিছ দিন গেল। হরিবল্লাভের সংসার যেমন চলিতেছিল, তেমনি চলিতে লাগিল । সকলে খাধা দায় বেড়ায়---সংসারের কাজ করে। ব্রজেশবরের দিন কেবল ঠিক সে রকম যায় না। হঠাৎ কেহ কিছ: বঝিল না—জানিল না। প্রথমে মা জানিল। গহিণী দেখিল, ছেলের পাতে দাঁধের বাটিতে দধি পড়িয়া থাকে, মাছের মড়ার কেবল কন্ঠার মাছটাই ভূক্ত হয়, “বান্না ভাল হয় নাই” বলিয়া, রজ ব্যঞ্জন ঠেলিয়া রাখে। মা মনে করিলেন, “ছেলের মন্দাগি ন হইয়াছে।” প্রথমে জবিক লেব, প্রভৃতি টোটকার ব্যবস্থা করিলেন, তার পর কবিরাজ ডাকিবার কথা হইল। ব্ৰজ হাসিয়া উড়াইয়া দিল। মাকে ব্রজ হাসিয়া উড়াইয়া দিল, কিন্তু ব্ৰহ্মঠাকুবাণীকে পারিল না। বড়েী রাজেশবরকে এক দিন এক পাইয়া চাপিয়া ধরিল। “হ্যাঁ রে ব্রজ, তুই আর নয়ানবোঁয়ের মািখ দেখিস না কেন ?” ব্ৰজ হাসিয়া বলিল, “মািখখানি একে অমাবস্যার রাত্রি, তাতে মেঘ ঝড় ছাড়া নেই—দেখিতে বড় সাধ নেই।” ব্ৰহ্ম। তা মরকে গে, সে নয়ানবোঁ বকিবে-তুই খাস নে কেন ? ব্রজ। তুমি যে রধি ! ব্ৰহ্ম । আমি ত চিরকালই এমনি রধি । ব্রজ । আজকাল হাত পেকেছে । ব্ৰহ্ম | দািধও বঝি আমি রধি ? সেটাও কি রান্নার দোষ ? ব্রজ। গরগলোর দািধ বিগড়ে গিয়াছে। ব্ৰহ্ম। তুই হাঁ করে রাতদিন ভাবিস কি ? ব্রজ । কবে তোমােয় গঙগায় নিয়ে যােব। ব্ৰহ্ম। আর তোর বড়াইয়ে কাজ নাই। মাখে। অমন অনেকে বলে! শেষে এই নিমগাছের তলায় আমায় গঙ্গায় দিবি—তুলসী গাছটাও দেখতে পাব না! তা তুই ভােব না। যা হয়—কিন্তু তুই আমার গঙ্গা ভেবে ভেবে এত রোগা হ’য়ে গেলি কেন ? ব্রজ । ওটা কি কম ভাবনা ? b>8