পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कश ब्रा5नाबब्ली রঙগরাজ কপাটে করাঘাত করিয়া বলিল, “মহাশয়! দবার খােলন।” ভিতর হইতে সদ্যোনিদ্রোথিত ব্রজেশবের উত্তর করিল, “কে ? এত গোল কিসের ?” রঙ্গরাজ বলিল, “গোল কিছই না—বজরায় ডাকাইত পড়িয়াছে।” ব্রজেশবের কিছফক্ষণ সন্তব্ধ হইয়া, পরে ডাকিতে লাগিল, “পাঁড়ে! তেওয়ারি! রামসিং!” রামসিং ছাদের উপর হইতে বলিল, “ধৰ্ম্মণাবতার! শালা লোক সব কোইকো বাঁধকে রাকাখা।” ব্রজেশবের ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “শনিয়া বড় দঃখিত হইলাম। তোমাদের মত বীরপরিষদের ডালরাটি খাইতে না দিয়া বধিয়া ফেলিয়াছে! ডাকাইতের এ বড় ভ্রম। ভাবনা করিও না— শনিয়া রঙগরাজ। ঈষৎ হাসিল। বলিল, “আমারও সেই মত; এখন দাবার খলিবেন বোধ হয়। “ ব্রজেশবের জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কে ?” রঙগরাজ ! আমি একজন ডাকাইত মাত্ৰ। দবার খোলেন এই ভিক্ষা। “কেন দাবার খলিব ?” রঙ্গরাজ। আপনার সববস্ব লটপাট কবিব। ব্রজেশবের বলিল, “কেন ? আমাকে কি হিন্দ স্থানী ভেড়ীওয়ালা পাইলে ? আমার হাতে দোনােলা বন্দক আছে—তৈয়ার, যে প্রথম কামরায় প্রবেশ করিবে, নিশ্চয় তাহার প্রাণ লইব ।” রঙগরাজ ! একজন প্রবেশ করিব না-কািয জনকে মারিবেন ? আপনিও ব্রাহ্মণ— আমিও ব্ৰাহ্মণ। এক তরফ ব্ৰহ্মহত্যা হইবে। মিছামিছি ব্ৰহ্মহত্যায় কাজ কি ? ব্রজেশবের বলিল, “সে পােপটা না হয়। আমিই সস্বীকার করিব।” এই কথা ফরাইতে না ফরাইতে মড় মাড় শবদ হইল। বজরার পাশেব দিকের একখানা কপাট ভাঙিগয়া, একজন ডাকাইত কামরার ভিতর প্রবেশ করিলা দেখিয়া, ব্রজেশবের হাতের বন্দকে ফিরাইয়া তাহার মাথায় মারিল্য। দস্য মচ্ছিত হইয়া পড়িল। এই সময়ে রঙগরাজ বাহিরের কপাটে জোরে দই বার পদাঘাত করিল। কপাট ভাঙিগয়া গেল। রঙগরাজ কামরার ভিতর প্রবেশ করিল। ব্রজেশবের আবার বন্দক ফিরাইস ধরিয়া, রঙ্গরাজকে লক্ষ্য করিতেছিলেন, এমন সময়ে রঙ্গরাজ তাঁহার হােত হইতে বন্দকে কড়িয়া লইল। দই জনেই তুল্য বলশালী, তবে রঙগরাজ অধিকতর ক্ষিপ্ৰহস্ত। ব্রজেশবের ভাল করিয়া ধরিতে না ধরিতে, রঙগরাজ বন্দক কাড়িয়া লইল । ব্রজেশবের তখন দঢ়তর মন্ডিটবদ্ধ কবিয়া সমন্দির্য বলের সহিত রওগরাজের মাথায় ঘাষি তুলিল । রঙগরাজ ঘাষিটা হাতে ধরিয়া ফেলিল। বজাবার এক দিকে অনেক অস্ত্র ঝালান ছিল। এই সময়ে ব্রজেশবের ক্ষিপ্ৰহস্তে তাহার মধ্য হইতে একখানা তীক্ষ্যধার তরবারি লইয়া হাসিয়া বলিল, “দেখ ঠাকুর, ব্ৰহ্মহত্যায় আমার ভয় নাই।” এই বলিযা রঙগাঁধীজিকে কাটিতে ব্রজেশবের তরবারি উঠাইল । সেইসময়ে আর চারি পাঁচ জন দস্য মন্তঃস্বরে কামবার ভিতর প্রবেশ করিয়া, তাহার উপর পড়িল। উখিত তরবারি হাত হইতে কড়িয়া লইল । দলই জনে দই হাত চাপিয়া ধরিল— একজন দড়ি লাইফা ব্ৰজেশবরকে বলিল, “ বাঁধিতে হইবে কি ?” তখন ব্রজেশবের বলিল, “বাঁধিও না। আমি পরাজয় স্বীকার করিলাম ! কি চাও বাল—আমি দিতেছি।” রঙ্গরাজু বলিল, “আপনার যােহা কিছু আছে, সব লইয়া যাইব । কিছু ছাড়িয়া দিতে পারিতাম।— কিন্তু যে কিলে তুলিয়াছিলেন।---আমার মাথায় লাগিলে মাথা ভাঙিগয়া যাইত—এক পয়সাও ছাড়িব না।” ব্রজেশবের বলিল, “যাহা বজরায় আছে।---সব লইয়া যাও, এখন আর আপত্তি করিব না।” ব্রজেশবের এ কথা বলিবার পর্বেই দস্যরা জিনিসপত্র বজরা হইতে ছিপে তুলিতে আরম্ভ করিয়াছিল। এখন প্রায় পাঁচিশ জন লোক বজরায় উঠিয়াছিল। জিনিসপত্র বজরায় বিশেষ কিছ. ছিল না, কেবল পরিধেয় বস্ত্ৰাধি, পাজার সামগ্রী, এইরুপ মাত্র। মহত্তমধ্যে তাহারা সেই সকল দ্রব্য ছিপে তুলিয়া ফেলিল। তখন আরোহী রঙ্গরাজকে বলিল, “সব জিনিস লইয়াছআর কেন দিক কর, এখন সবস্থানে যাও।” রঙ্গরাজ উত্তর করিল, “যাইতেছি। কিন্তু আপনাকেও আমাদের সঙ্গে যাইতে হইবে।” ব্ৰ। সে কি ? আমি কোথায় যাইব ? も"ミや