পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दका ज्ञष्नाबव्ी করিতে লাগিল। নিশি তখন সাগরকে বলিল, “যা, এখন তোর স্বামীর জন্য আপন হাতে তামাকু সাজিয়া লইয়া আয় ।” সাগর ক্ষিপ্ৰহস্তে সোণার আলবোলার উপর হইতে কলিকা লইয়া গিয়া, শীঘ্র মগনাভিসগন্ধি তামাকু সাজিয়া আনিল। আলবোলায় চড়াইযা দিল। ব্রজেশবের বলিলেন, “আমাকে একটা হকায় নল করিয়া তামাকু দাও।” নিশি বলিল, “কোন শঙ্কা নাই—ঐ আলবোলা উৎসস্ট নয় ; কেহ কখন উহাতে তামাকু খায় নাই। আমরা কেহ তামাকু খাই না।” ৱ। সে কি ? তবে এ আলবোলা কেন ? নিশি। দেবীর রাণীগিরির দোকানদারি – ব্র | তা হৌক—আমি যখন আসিলাম, তখন যে তামাকু সাজা ছিল—কে খাইতেছিল ? নিশি। কেহ না—সাজাও দোকানদারি— ঐ আলবোলা সেই দিন বাহির হইয়াছে- ঐ তনামাকু সেই দিন কেনা হইয়া আসিয়াছে— সাগরের স্বামী আসিবে- বলিয়া। ব্রজেশবের মাখনলাঁট পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন——অভূক্ত বোধ হয়। তখন ব্রজেশবের ধর্মপানের অনিবর্বিচনীয় সমুখে মগনি হইলেন। নিশি তখন সাগরকে বলিল, “তুই পোড়ারমখী, আর দাঁড়াইয়া কি করিস-পরিষমানষে হকার নল মাখে করিলে আর কি সত্ৰী পরিবারকে মনে ঠাঁই দেয় ? যা, তুই গোটাকতক পান সাজিয়া আন। দেখিস-আপন হাতে পান সাজিয়া আনিস-পরের সাজা আনিস না---পারিস যদি একটি ওষধ করিস।” সাগর বলিল, “আপন হাতেই সাজা আছে— ওষধি জানিলে আমার এমন দশা হইবে কেন ?" এই বলিয়া সাগর চন্দন কপাের চুয়া গোলাপে সদগন্ধি পানের রাশি সোণার বাটা পরিয়া আনিল। তখন নিশি বলিল, “তোর স্বামীকে অনেক বকেছিস-কিছ, জলখাবার নিয়ে আয়।” ব্ৰজেশবরের মািখ শকাইল, “সববনাশ! এত রাত্রে জলখাবার! ঐটি মাফ করিও ।” কিন্তু কেহ তাহার কথা শানিল না—সাগর বড় তাড়াতাড়ি আর এক কামরায় ঝাঁট দিয়া, জলের হাতে মাছিয়া, একখানা বড় ভারি পর, আসন পাতিয়া চারি-পাঁচখানা রপোর থালে সামগ্রী সাজাইয়া ফেলিল। সবৰ্ণ-পাত্রে উত্তম সগন্ধি শীতল জল রাখিয়া দিল। জানিতে পারিয়া নিশি ব্ৰজেশবরকে বলিল, “ঠাঁই হইয়াছে---উঠ। “ ব্রিজেশবের উকি মারিয়া দেখিয়া, নিশির কাছে জোড়হাত করিল। বলিল, “ডাকাইতি করিয়া ধরিয়া আনিয়া কয়েদ করিয়ােছ—সে অত্যাচার সহিয়াছেকিন্তু এত রাত্রে এ অত্যাচার সহিবে না-দোহাই।” স্ত্রীলোকেরা মাতজনা করিল না। ব্রজেশবের অগত্যা কিছ খাইল । সাগর তখন নিশিকে বলিল, “ব্রাহ্মণ ভোজন করাইলে কিছ: দক্ষিণা দিতে হয়।” নিশি বলিল, “দক্ষিণ রাণী স্বয়ং দিবেন। এসো ভাই, রাণী দেখিবে এসো।” এই বলিয়া নিশি ব্রজেশবরকে আর এক কামরায় সঙেগ করিয়া লইয়া গেল। অস্টেম পরিচ্ছেদ নিশি ব্রজেশবরকে সঙ্গে করিয়া দেবীর শয্যাগহে লইয়া গেল। ব্রজেশবের দেখিলেন, শয়নঘর দরবার কামরার মত অপব্ব সজায় সন্ডিজত। বেশীর ভাগ, একখানা সবৰ্ণমন্ডিত মত্তার ঝালরযক্ত ক্ষদ্র পালঙ্ক আছে। কিন্তু ব্ৰজেশবরের সে সকল দিকে চক্ষ ছিল না। এত ঐশবয্যের অধিকারিণী প্রথিতনাম্নী দেবীকে দেখিলেন। দেখিলেন, কামরার ভিতর অনাবত কাঠের উপর বসিয়া, অদধাবগন্ঠেনবতী একটি সত্ৰীলোক। নিশি ও সাগরে, ব্রজেশবের যে চাঞ্চল্যময়ত দেখিয়াছিলেন, ইহাতে তাহার কিছই নাই। এ সিথুরা, ধীরা-নিম্নদলিট, লতাজাবনতমখী। নিশি ও সাগর, বিশেষতঃ নিশি সৰ্ব্বাঙ্গে রত্নালঙ্কারমন্ডিতা, বহমাল্য বসনে আব্বতা –কিন্তু ইহার তা কিছুই নাই। দেবী ব্ৰজেশবরের সঙ্গে সাক্ষাতের ভরসায় বহমতুল্য বস্ত্ৰালঙ্কারে ভূষিত হইয়াছিলেন, ইহা আমরা পকেবই দেখিয়াছি। কিন্তু সাক্ষাতের সময় উপস্থিত হইলে, দেবী সে সকলই ত্যাগ করিয়া সামান্য বস্ত্র পরিয়া, হাতে কেবল একখানি মাত্র সামান্য অলঙ্কার রাখিয়া ব্ৰজেশবরের প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। প্রথমে নিশির বন্ধিতে দেবী ভ্ৰমে পড়িয়াছিল; শেষে tᎴ Ꮼ8