পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७क ब्रष्नाबव्ी বিশ্ববাসজনিত নিশ্চিন্তভােব প্ৰযন্তই হউক, বিমলা বহিৰ্গমনকালে জােলরন্ধ্রুপথ পাকবািবং অবরুদ্ধ করিয়া যান নাই। ইহাতে প্ৰমাদ ঘটনের এক কারণ উপস্থিত হইল। জানালার অতি নিকটে এক আমবােক্ষ ছিল, তাহার অন্তরালে এক শস্ত্ৰধারী পরিষ দন্ডায়মান ছিল; সে বিমলার এই ভ্ৰম দেখিতে পাইল। বিমলা যতক্ষণ না দক্ষিটপথ অতিক্ৰম করিলেন, ততক্ষণ শস্ত্ৰপাণি পরিষ বক্ষের অন্তরালে রহিল; বিমলা দটির অগোচর হইলেই সে ব্যক্তি বক্ষমলে শব্দশীল চশম পাদকো ত্যাগ করিয়া শনৈঃ শনৈঃ পাদবিক্ষেপে গবাক্ষসন্নিধানে আসিল। প্রথমে গবাক্ষের মক্তপথে কক্ষমধ্যে দন্টিপাত করিল, কক্ষমধ্যে কেহ নাই দেখিয়া, নিঃশব্দে প্রবেশ করিল। পরে সেই কক্ষের দাবার দিয়া অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিল। এদিকে রাজপত্র বিমলার নিকট বশর্তা পাইয়া পৰ্ব্বব্যাবৎ বাক্ষারোহণ করিলেন এবং পািব্বলক্ষিত বক্ষে দক্ষিটপাত করিলেন, দেখিলেন যে, এক্ষণে একটিমাত্র উষ্ণীষ দেখা যাইতেছে, দ্বিতীয় ব্যক্তি তথায় নাই; রাজপত্রে একটি বর্শা বাম করে রাখিয়া, দ্বিতীয় বিশ। দক্ষিণ করে গ্রহণপৰ্ব্ববর্তক, বাক্ষস্থ উষ্ণীষ লক্ষ্য করিলেন। পরে বিশাল বাহবিল সহযোগে বশর্তা নিক্ষেপ করিলেন। তৎক্ষণাৎ প্রথমে বক্ষপল্লবের প্রবল মৰ্ম্মমরি শব্দ, তৎপরেই ভূতলে গর, পদার্থের পতন শব্দ হইল ; উষ্ণীষ আর বক্ষে নাই। রাজপত্র বঝিলেন যে, তাঁহার অব্যৰ্থ সন্ধানে উষ্ণীষধারী বক্ষশাখাচুৰ্য্যত হইয়া ভূতলে পড়িয়াছে। জগৎ সিংহ দ্রুতগতি ব্যক্ষ হইতে অবতরণ করিয়া, যথা আহত ব্যক্তি পতিত হইয়াছে, তথা গেলেন; দেখিলেন যে, একজন সৈনিক-বেশধারী সশস্ত্র মসলমান মতবৎ পতিত হইয়া রহিয়াছে। বশর্তা তাহার চক্ষর পাশেবা বিদ্ধ হইয়াছে। রাজপত্র মন্তবৎ দেহ নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন যে, একেবারে প্রাণবিয়োগ হইয়াছে। বশর্তা চক্ষর পাশে বা বিন্ধ হইয়া মস্তিক ভেদ করিয়াছে। মত ব্যক্তির কবচমধ্যে একখানি পত্র ছিল; তাহার অলপভাগ বাহির হইয়া ছিল। জগৎ সিংহ ঐ পত্ৰ লইয়া জ্যোৎস্নায় আনিয়া পাঠ করিলেন। তাহাতে এই রােপ লেখা ছিল— করবেী" খাঁর আজ্ঞানবিত্তিগণ এই লিপি দভিটিমাত্র লিপিকাবাহকের আজ্ঞা প্রতিপালন কতলা খাঁ।” বিমলা কেবল শব্দ শনিতেছিলেন মাত্র, সবিশেষ কিছই জানিতে পারেন নাই। রাজকুমার তাঁহার নিকটে আসিয়া সবিশেষ বিবত করিলেন। বিমলা শনিয়া কহিলেন, “যবরাজ ! আমি এত জানিলে কখন আপনাকে বশর্তা দিতাম না। আমি মহাপাতাকিনী, আজ যে কম করিলাম, বহকালেও ইহার প্রায়শিচত্ত হইবে না।” যদুবরাজ কহিলেন, “শত্রবেধে ক্ষোভ কি ? শত্রবধ ধৰ্ম্মেম আছে।” বিমলা কহিলেন, “যোদ্ধায় এমত বিবেচনা করােক। আমরা সত্ৰীজাতি।” ক্ষণপরে বিমলা কহিলেন, “রাজকুমার, আর বিলম্বে অনিস্ট আছে। দাগে চলন, আমি উভয়ে দ্রুতগতি দগমলে আসিয়া প্রথমে বিমলা, পশ্চাৎ রাজপত্র প্রবেশ করিলেন। প্রবেশকালে রাজপত্রের হৃৎকক্ষপ ও পদকক্ষপ হইল। শত সহস্র সেনার সমীপে যাঁহার মস্তকের একটি কেশও সস্থানভ্রস্ট হয় নাই, তাঁহার এ সখের আলয়ে প্রবেশ করিতে হৃৎকক্ষপ কেন ? বিমলা পৰ্ব্বব্যাবৎ গবাক্ষদ্বার রদ্ধ করিলেন; পরে রাজপত্রকে নিজ শয়নাগারে লইয়া গিয়া কহিলেন, “আমি আসিতেছি, আপনাকে ক্ষণেক এই পালঙ্কের উপর বসিতে হইবেক। যদি অন্য চিন্তা না থাকে, তবে ভাবিয়া দেখােন যে, ভগবানের আসন বটপত্রে মাত্র।” বিমলা প্ৰস্থান করিয়া ক্ষণপরেই নিকটস্থ কক্ষের দ্বার উদ্ঘাটন করিলেন, “যদুবরাজ ! এই দিকে আসিয়া একটা নিবেদন শােনন।” যবেরাজের হৃদয় আবার কাঁপে, তিনি পালঙ্ক হইতে উঠিয়া কক্ষান্তরমধ্যে বিমলার নিকট १८ळ• । বিমলা তৎক্ষণাৎ বিদ্যুতের ন্যায়। তথা হইতে সরিয়া গেলেন ; যবেরাজ দেখিলেন, সবাসিত কক্ষ ; রজতপ্রদীপ জবলিতেছে; কক্ষপ্রান্তে অবগঠনবতী রমণী—সে তিলোত্তমা! ԵՀ