পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•দগেশনন্দিনী দবারা ওড়না ধরিয়া দিবতীয় হস্তে চাবি খলিয়া নিজ কাটিবন্ধে রাখিলেন। পরে যাহা করিলেন, তাহাতে বিমলার মািখ শকাইল । ওসমান বিমলাকে এক শত সেলাম করিয়া যোড়হাতে বলিলেন, “মাফ করিবেন।” এই বলিয়া ওড়না লইয়া তন্দ্বারা বিমলার দই হস্ত আলিসার সহিত দঢ়বন্ধ করিলেন। বিমলা কহিলেন, “এ কি ?” ওসমান কহিলেন, “প্রেমের ফাঁস।” বি। এ দম্প্রকমের ফল আপনি অচিরাৎ পাইবেন! * ওসমান বিমলাকে তদাবস্থায় রাখিয়া চলিয়া গেলেন। বিমলা চীৎকার করিতে লাগিলেন। কিন্তু ফলোদয় হইল না। কেহ শানিতে পাইল না। ওসমান পদ্বীপথে অবতরণ করিয়া পানব্বার বিমলার কক্ষের নীচের কক্ষে গেলেন। তথায় বিমলার ন্যায় জানালার চাবি ফিরাইয়া জানালা দেয়ালের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিলেন। পথ ! মন্ত হইলে ওসমান মদ, মদ, শিশ দিতে লাগিলেন। তচ্ছবিণমাত্রেই বাক্ষান্তরাল হইতে এক , জন পাদকাশনাযোদ্ধা গবাক্ষনিকটে আসিয়া গহমধ্যে প্রবেশ করিল। সে ব্যক্তি প্রবেশ করিলে অপর এক ব্যক্তি আসিল। এইরপে ক্ৰমে ক্ৰমে বহসংখ্যক পাঠান সেনা নিঃশব্দে দগমধ্যে ? প্রবেশ করিল। শেষে যে ব্যক্তি গবাক্ষ নিকটে আসিল, ওসমান তাহাকে কহিলেন, “আর না, ! তোমরা বাহিরে থােক; আমার পািব্ব কথিত সঙ্কেতধবনি শনিলে তোমরা বাহির হইতে দগ আক্ৰমণ করিও; এই কথা তুমি তাজ খাঁকে বলিও।” - সে ব্যক্তি ফিরিয়া গেল। ওসমান লব্ধপ্রবেশ সেনা লইয়া পনরাপি নিঃশব্দ-পদ-সঞ্চারে প্রাসাদারোহণ করিলেন ; যে ছাদে বিমলা বন্ধন-দশায় বসিয়া আছেন, সেই ছাদ দিয়া গমনকালে কহিলেন, “এই সত্ৰীলোকটি বড় বন্ধিমতী ; ইহাকে কদাপি বিশবাস নাই। রহিম সেখ! তুমি ইহার নিকট প্রহরী থােক; যদি পলায়নের চেস্টা বা কাহারও সহিত কথা কহিতে উদ্যোগ করে, কি উচ্চ কথা কয়, তবে সত্ৰীবধে ঘণা করিও না।” “যে আজ্ঞা”, বলিয়া রহিম তথায় প্রহরী রহিল। পাঠান সেনা ছাদে ছাদে দাগের অন্য দিকে চলিয়া গেল। উনবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ প্রেমিকে প্রেমিকে বিমলা যখন দেখিলেন যে, চতুর ওসমান অন্যত্র গেলেন, তখন তিনি ভরসা পাইলেন যে, কৌশলে মাক্তি পাইতে পারিবেন। শীঘ্র তাহার উপায় চেন্টা করিতে লাগিলেন। প্রহরী কিয়ৎক্ষণ দন্ডায়মান থাকিলে বিমলা তাহার সহিত কথোপকথন আরম্ভ করিলেন। প্রহরী হউক, আর যমদােতই হউক, সন্দরী রমণীর সহিত কে ইচ্ছাপাকবািক কথোপকথন না করে ? বিমলা প্রথমে এ ও সে নানাপ্রকার সামান্য বিষয়ক কথাবাত্তা কহিতে লাগিলেন। ক্ৰমে প্রহরীর “নামধাম গাহকৰ্ম্ম সখদঃখ বিষয়ক নানা পরিচয় জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। প্রহরী নিজ সম্বন্ধে বিমলার এতদর পয্যন্ত ঔৎসােক্য দেখিয়া বড়ই প্রীত হইল। বিমলাও সহযোগ দেখিয়া ক্ৰমে ক্ৰমে নিজ তণ হইতে শাণিত অস্ত্র সকল বাহির করিতে লাগিলেন। একে বিমলার অমতময় রসালাপ, তাহাতে আবার তাহার সঙ্গে সঙ্গে সেই বিশাল চক্ষর অব্যৰ্থ কটাক্ষসন্ধান, প্রহরী একেবারে গলিয়া গেল। যখন বিমলা প্রহরীর ভঙ্গীভাবে দেখিলেন যে, তাহার অধঃপাতে যাইবার সময় হইয়া আসিয়াছে, তখন মদ, মদ সাবরে কহিলেন, “আমার কেমন ভয় করিতেছে, সেখজী, তুমি আমার কাছে বসো না।” প্রহরী চরিতাৰ্থ হইয়া বিমলার পাশে বা বসিল । ক্ষণকাল অন্য কথোপকথনের পর বিমলা দেখিলেন যে, ঔষধ ধরিয়াছে। প্রহরী নিকটে বসিয়া অবধি ঘন ঘন তাঁহার পানে দভিটপাত করিতেছে। তখন বলিলেন, “সেখজী, তুমি বড় ঘামিতেছ; একবার আমার বন্ধন খলিয়া দাও { যদি, তবে আমি তোমাকে বাতাস করি, পরে আবার বাঁধিয়া দিও।” সেখজীর কপালে ঘৰ্ম্মম বিন্দও ছিল না, কিন্তু বিমলা অবশ্য ঘৰ্ম্মম না দেখিলে কেন বলিবে ? আর এ হাতের বাতাস কার ভাগ্যে ঘটে। ঐ এই ভাবিয়া প্রহরী তখনই বন্ধন খলিয়া দিল। ২ বিমলা কিয়ৎক্ষণ ওড়না দবার প্রহরীকে বাতাস দিয়া সবচ্ছন্দে ওড়না নিজ অঙ্গে পরিধান করিলেন। পনবন্ধনের নামও করিতে প্রহরীর মািখ ফাটিল না। তাহার বিশেষ কারণও ছিল; bዖGኔ