व७कभ ब्रा5नाबव्नी চন্দ্রচড় গপতচরের প্রত্যাগমন প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। গপতচর ফিরিলেই তিনি সংবাদ পাইবেন, কখন কোন পথে তোরাব খাঁর সৈন্য যাত্রা করিবে ; তখন ব্যবস্থা করিবেন। এ দিকে অন্তঃপরে সংবাদ পৌছিল যে, তোরাব খাঁ সসৈন্যে মহম্মদপাের লাঠিতে আসিতেছে। বহিব্ববাটীর অপেক্ষা অন্তঃপরে সংবাদটা কিছ. বাড়িয়া যাওয়াই রীতি। বাহিরে, “আসিতেছে।” অর্থে বঝিল, আসিবাব উদ্যোগ করিতেছে। ভিতর মহলে, “আসিতেছে।” অর্থে বঝিল, “প্রায় আসিয়া পৌছিয়াছে'। তখন সে অন্তঃপারমধ্যে কাঁদাকাটার ভারি ধর্ম পড়িয়া গেল । নন্দার বড় কাজ বাড়িয়া গেল—কয়জনকে একা বঝাইবে, কয়জনকে থামাইবে! বিশেষ রম্যাকে লইয়াই নন্দাকে বড় ব্যস্ত হইতে হইল—কেন না, রমা ক্ষণে ক্ষণে মােচ্ছ। যাইতে লাগিল। নন্দা মনে মনে ভাবিতে লাগিল, “সতীন মরিয়া গেলেই বাঁচি-কিন্তু প্ৰভু যখন আমাকে অন্তঃপরের ভার দিয়া গিয়াছেন, তখন আমাকে আপনার প্রাণ দিয়াও সতীনকে বাঁচাইতে হইবে।” তাই নন্দা সকল কাজ ফেলিয়া রামার সেবা করিতে লাগিল । এ দিকে পৌরস্ত্ৰীগণ নন্দাকে পরামর্শ দিতে লাগিল-—“মা! তুমি এক কাজ কর-সকলের প্রাণ বাঁচাও । এই পরী মসলমানকে বিনা যন্ধে সমাপণ কর-সকলের প্রাণ ভিক্ষা মাঙিগয়৷ লও । আমরা বাঙ্গালী মানষে, আমাদের লড়াই ঝগড়া কাজ কি মা! প্রাণ বাঁচিলে আবার সব হবে। সকলের প্রাণ তোমার হাতে- মা, তোমার মগুগল হোক।---আমাদের কথা শোেন।” 1 নন্দা তাহাদিগকে বঝাইলেন। বলিলেন, “ভয় কি মা! পােরষি মানষের চেয়ে তোমরা কি বেশী বঝ ? তাঁরা যখন বলিতেছেন ভয় নাই, তখন ভয় কেন ? তাঁদের কি আপনার প্রাণে দরদ নাই—না আমাদের প্রাণে দরদ নাই ?” এই সকল কথার পর রমা বড় মােচ্ছা গেল না। উঠিয়া বসিল । কি কথা ভাবিয়া মনে সাহস পাইয়াছিল, তাহা পরে বলিতেছি। চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ গঙগারাম নগররক্ষক। এ সময়ে রাত্ৰিতে নগর পরিভ্রমণে তিনি বিশেষ মনোযোগী। যে দিনের কথা বলিলাম, সেই রাত্ৰিতে, তিনি নগরের অবস্থা জানিবার জন্য, পদব্রজে, সামান্য বেশে, গোপনে, একা নগর পরিভ্রমণ করিতেছিলেন। রাত্রি তৃতীয় প্রহরে, ক্লান্ত হইয়া তিনি গাহে প্রত্যাগমন করিবার বাসনায় গাহাভিমখী হইতেছিলেন, এমন সময়ে কে আসিয়া পশ্চাৎ হইতে তাঁহার কাপড় ধরিয়া টানিল । গঙগারাম পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখিলেন, একজন সত্ৰীলোক। রাত্রি অন্ধকার, রাজপথে আর কেহ। নাই—কেবল একাকিনী সেই সত্ৰীলোক। অন্ধকারে সত্ৰীলোকের আকার, স্ত্রীলোকের বেশ, ইহা জানা গেল—কিন্তু আর কিছই বৰ্ব্বা গেল না। গঙ্গারাম জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে ?” সত্ৰীলোক বলিল, “আমি যে হই, তাতে আপনার কিছ: প্রয়োজন নাই। আমাকে বরং জিজ্ঞাসা করন যে, আমি কি চাই।” কথার সবরে বোধ হইল যে, এই সত্ৰীলোকের বয়স বড় বেশী নয়। তবে কথাগােলা জোর জোর বটে। গঙগারাম বলিল, “সে কথা পরে হইবে। আগে বল দেখি, তুমি সত্ৰীলোক, এত রাত্রে একাকিনী রাজপথে কেন বেড়াইতেছ? আজকাল কিরােপ সময় পড়িয়াছে, তাহা কি STF NT ? " সত্ৰীলোক বলিল, “এত রাত্রে একাকিনী আমি এই রাজপথে আর কিছ: করিতেছি না--- কেবল আপনারই সন্ধান করিতেছি।” গঙ্গারাম। মিছা কথা। প্রথমতঃ তুমি চেনাই না যে, আমি কে ? সত্ৰীলোক। আমি চিনি যে, আপনি দাস মহাশয়, নগররক্ষক । গঙ্গারাম। ভাল, চেন দেখিতেছি । কিন্তু আমাকে এখানে পাইবার সম্পভাবনা, ইহা তুমি জানিবার সম্পভাবনা নাই; কেন না, আমিই জানিতাম না যে, আমি এখন এ পথে আসিব । সত্ৰীলোক। আমি অনেকক্ষণ ধরিয়া আপনাকে গলিতে গলিতে খাজিয়া বেড়াইতেছি। আপনার বাড়ীতেও সন্ধান লইয়াছি। গণ্ডগারাম । কেন ? N OO
পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯০১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
