পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতারাম মহাপরিষ কেবল জয়ন্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন—শ্ৰীর সঙ্গে নহে। জয়ন্তী একা হস্তিগরুফামধ্যে প্রবেশ করিল,—শ্ৰী ততক্ষণে বির পাতীরে বেড়াইতে লাগিল। পরে, শিখরদেশে আরোহণ করিয়া, চন্দনবােক্ষতলে উপবেশন করিয়া, নিম্পেন্ন ভূতলস্থ নদীতীরের এক তালবনের অপব্ব শোভা দশর্ণনা করিতে লাগিল। পরে জয়ন্তী ফিরিয়া আসিল । মহাপরিষ কি আদেশ করিলেন, জয়ন্তীকে না জিজ্ঞাসা করিয়া শ্ৰী বলিল, “কি মিস্ট পাখীর শবদ ! কানি ভরিয়া গেল ।” জয়ন্তী। স্বামীর কন্ঠস্বরের তুল্য কি ? শ্ৰী । এই নদীব তর-তর গদ্য-গদ শব্দের তুলা । জয়ন্তী। স্বামীর কন্ঠস্বরের তুল্য কি ? শ্ৰী। অনেক দিন সবামীর কন্ঠ শনি নাই – বডি আর মনে নাই । হায়! সীতারাম ! জয়ন্তী তাহা জানিত, মনে করাইবার জন্য সে কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছিল। জয়ন্তী বলিল, “এখন শনিলে আবে তেমন ভাল লাগিবে না কি ?” শ্ৰী চুপ করিয়া রহিল। কিছশক্ষণ পরে মািখ তুলিয়া, জয়ন্তীর পানে চাহিয়া শ্ৰী জিজ্ঞাসা কবিল, “কেন, ঠাকুর কি আমাকে পতিসন্দর্শনে যাইতে অনািমতি করিয়াছেন ?” জয়ন্তী ! তোমাকে ত যাইতেই হইবে আমাকেও তোমার সঙেগ যাইতে বলিয়াছেন । শ্ৰী । কেন ? জযন্তী । তিনি বলেন, শাভ হইবে । শ্ৰী। এখন আর আমার তাহাতে শািভাশা,ভ, সখে-দঃখ কি ভগিনি ? জয়ন্তী। বঝিতে পারিলে না কি শ্ৰী ? তোমায় আজিও কি এত বঝাইতে হইবে ? ॐी। ना-दीद नाथे। জয়ন্তী। তোমার শতভাশােভ উদ্দিন্ডট হইলে, ঠাকুর তোমাকে কোন আদেশ করিতেন না— আপনার সাবাথ খ্যজিতে তিনি কাহাকেও আদেশ করেন না। ইহাতে তোমার শভোশােভ কিছই নাই। শ্ৰী। বঝিয়াছি—আমি এখন গেলে আমার স্বামীর শাভ হইবার সম্পভাবনা ? জয়ন্তী। তিনি কিছই সাপস্ট বলেন না—অত ভাঙ্গিয়াও বলেন না, আমাদিগের সঙ্গে বেশী কথা কহিতে চাহেন না। তবে তাঁহার কথার এইমাত্র তাৎপৰ্য্য হইতে পারে, ইহা আমি বঝি। আর তুমিও আমার কাছে এত দিন যাহা শনিলে শিখিলে, তাহাতে তুমিও বোধ হয় বঝিতে পারিতেছ। শ্ৰী।। তুমি যাইবে কেন ? জয়ন্তী। তাহা আমাকে কিছই বলেন নাই। তিনি আজ্ঞা করিয়াছেন, তাই আমি যাইব । না। যাইব কেন ? তুমি যাইবে ? শ্ৰী।। তাই ভাবিতেছি। জয়ন্তী। ভাবিতেছ। কেন ? সেই প্রিয়প্রাণহািন্ত্ৰী কথাটা মনে পড়িয়াছে বলিয়া কি ? শ্ৰী। না। এখন আর তাহাতে ভীত নই ৷ জয়ন্তী। কেন ভীত নও, আমাকে বঝাও । তা বঝিয়া তোমার সঙ্গে যাওয়া আমি সিথর করিব । শ্ৰী। কে কাকে মারে বহিন ? মারিবার কত্তা। একজন—ধে মীরবে, তিনি তাঁহাকে মারিয়া রাখিয়াছেন। সকলেই মরে । আমার হাতে হউক, পরের হাতে হউক, তিনি এক দিন মাতৃত্যুকে পাইবেন। আমি কখন ইচ্ছাপবিবেক তাঁহাকে হত্যা কুরিব না, ইহা বলাই বাহদুল্য ; তবে যিনি সববকত্তা, তিনি যদি ঠিক করিয়া থাকেন যে, আমারই হাতে তাঁহার সংসারযন্ত্রণা হইতে নিম্প্রকৃতি ঘটিবে, তবে কাহার সাধ্য অন্যথা করে ? আমি বনে বনেই বেড়াই, আর সমদ্ৰপারেই যাই, তাঁহার আজ্ঞার বশীভুত হইতেই হইবে। আপনি সাবধান হইয়া ধৰ্ম্মমত আচরণ করিব— তাহাতে তাঁহার বিপদ ঘটে, আমার তাহাতে সখ-দঃখ কিছই নাই । হো হো সীতারাম! কাহার জন্য ঘরিয়া বেড়াইতেছা! জয়ন্তী মনে মনে বড় খসী হইল। জয়ন্তী জিজ্ঞাসা করিল, “তবে ভাবিতেছ। কেন ?” O SOCA