পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नीङाज्ञा চতুর্দশ পরিচ্ছেদ বলিয়াছি, চন্দ্রচড়ি ঠাকুরের সে রাত্ৰিতে ঘািম হইল না। অতি প্ৰত্যুষে তিনি রাজপ্রাসাদের উচ্চ চড়ে উঠিয়া চারি দিক নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। দেখিলেন, নদীর অপর পারে, ঠিক তাঁহার সম্পমখে, বহসংখ্যক নৌকা একত্র হইয়াছে। তীরে অনেক লোকও আছে বোধ হইতেছে, - কিন্তু তখনও তেমন ফরসা হয় নাই, বোঝা গেল না যে, তাহারা কি প্রকারের লোক। তখন তিনি গঙগারামকে ডাকিতে পাঠাইলেন। গঙগারাম আসিয়া সেই অট্টালিকাশিখরদেশে উপস্থিত হইল। চন্দ্রচড়ি জিজ্ঞাসা করিলেন, “ ও পারে। অত নৌকা কেন ?” । গঙ্গারাম নিরীক্ষণ করিয়া বলিল, “কি জানি ?” চন্দ্র। দেখ, তীরে বিস্তর লোক। এত নৌকা, এত লোক কেন ? গণ্ডগারাম। বলিতে ত পারি না। কথা কহিতে কহিতে বেশ আলো হইল। তখন বোধ হইল, ঐ সকল লোক সৈনিক । চন্দ্রচড়ি তখন বলিলেন, “গঙগারাম! সব্বনাশ হইয়াছে। আমাদের চর আমাদের প্রতারণা করিয়াছে। অথবা সেই প্রতারিত হইয়াছে। আমরা দক্ষিণ পথে সৈন্য পাঠাইলাম, কিন্তু ফৌজদারের সেনা এই পথে আসিয়াছে। সববনাশ হইল। এখন রক্ষা করে কে ?” গঙগারাম। কেন, আমি আছি কি করিতে ? চন্দ্র। তুমি এই কয় জন মাত্র দাগ রক্ষক লইয়া এই অসংখ্য সেনার কি করিবে ? আর তুমিও দাগ রক্ষার কোন উদ্যোগ করিতেছি না। কাল বলিয়াছিলাম বলিয়া আমাকে কড়া কড়া শনাইয়াছিলো। এখন কে দায় ভার ঘাড়ে করে ? গঙ্গা। আত ভয় পাইবেন না। ও পারে যে ফৌজ দেখিতেছেন, তাহা অসংখ্য নয়। এই কয়খানা নৌকায় কয় জন সিপাহী পার হইতে পারে ? আমি তীরে গিয়া ফৌজ লইয়া দাঁড়াইতেছি। উহারা যেমন তীরে আসিবে, অমনি উহাদিগকে টিপিয়া মারিব। গঙ্গারামের অভিপ্রায়, সেনা লইয়া বাহির হইবেন, কিন্তু এখন নয়, আগে ফৌজদারের সেনা নিবিবাঘের পার হউক। তার পর তিনি সেনা লইয়া দাগ দ্বার খালিয়া বাহির হইবেন, মক্ত দবার পাইয়া মসলমানেরা নিবিবাঘে গড়ের ভিতর প্রবেশ করিবে। তিনি কোন আপত্তি ਸ਼ਰੰ কাল যে মাত্তিটা দেখিয়াছিলেন, সেটা কি বিভীষিকা! কৈ, তার অ্যার কিছ 2दSाी क्राट् । চন্দ্রচড়ি সব বঝিলেন। তথাপি বলিলেন, “তবে শীঘ্ৰ যাও। সেনা লইয়া বাহির হও । বিলম্ব করিও না। নৌকা সকল সিপাহী বোঝাই লইয়া ছাড়িতেছে।” গঙ্গারাম তখন তাড়াতাড়ি ছাদের উপর হইতে নামিল। চন্দ্রচড়ি সািভয়ে দেখিতে লাগিলেন যে, প্রায় পঞ্চাশখানা নৌকায় পাঁচ ছয় শত মসলমান সিপাহী এক শ্রেণীবদ্ধ হইয়া যাত্ৰা করিল। তিনি অতিশয় অস্থির হইয়া দেখিতে লাগিলেন, কতক্ষণে গঙগারাম সিপাহী লইয়া বাহির হয়। সিপাহী সকল সাজিতেছে, ফিরিতেছে, ঘারিতেছে, সারি দিতেছে—কিন্তু বাহির হইতেছে না। চন্দ্রচড় তখন ভাবিলেন, “হায়! হায়! কি দন্ডকম করিয়াছি—কেন। গঙ্গারামকে বিশবাস করিয়াছিলাম! এখন সববনাশ হইল। কৈ, সেই জ্যোতিৰ্ম্মময়ী রাজলক্ষয়ীই বা কৈ ? তিনিও কি ছলনা করিলেন ? “ চন্দ্রচড় গঙ্গারামের সন্ধানে আসিবার অভিপ্ৰায়ে সৌধ হইতে অবতরণ করিবার উপক্ৰম করিতেছিলেন, এমন সময়ে গড়মা করিয়া এক কামানের আওয়াজ হইল। মসলমানের নৌকাশ্রেণী হইতে আওয়াজ হইল, এমন বোধ হইল না। তাহদের সঙেগ কামান আছে, এমন বোধ হইতেছিল না। চন্দ্রচড় নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন, মসলমানের কোন নৌকায় কামানের ধয়া দেখা যায় না। চন্দ্রচড়ি সবিস্ময়ে দেখিলুেন, যেমন কামানের শবদ হইল, অমনি মসলমানদিগের একখানি নৌকা জলমগন হইল; আরোহী সিপাহীরা সন্তরণ করিয়া অন্য নৌকায় উঠিবার চেস্টা করিতে লাগিল । “তবে কি এ আমাদের তোপা!” এই ভাবিয়া চন্দ্রচড়ি নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন। দেখিলেন, একটি সিপাহীও গড় হইতে SS V) Gk bio