পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७ झान्नाव्नीं নন্দা। মহারাজ ! যখন পঞ্চাশ হাজার লোক সামনে, শ্ৰী গাছের ডালে চড়িয়া নাচিয়াছিল, তখন কি তোমার বািক দশ হােত হইয়াছিল ? সীতারাম নন্দার প্রতি ক্লার দাম্পিট নিক্ষেপ করিলেন। বলিলেন, “তা হয়েছিল, নন্দা! আবার তেমন হইল না, সেই দঃখই আমার বেশী।” ইটটি মারিয়া পাটখোল খাইয়া, নন্দা যোড়হাতে ক্ষমা প্রার্থনা করিল। যোড় হাত করিয়া, নন্দা জিতিয়া গেল। সীতারাম শেষে দরবারে সম্মত হইলেন। বঝিলেন, ইহা না করিলে রমাকে ত্যাগ করিতে হয়। অথচ রমা নিরপরাধিনী, কাজেই দরবার ভিন্ন আর কত্তব্য নাই। বিষন্নভাবে রাজা, চন্দ্রচাড়ের নিকটে আসিয়া দরবারের কত্তব্যতা নিবেদিত হইলেন। ব্রাহ্মণ ঠাকুরের আবার পরদার উপর ততটা শ্রদ্ধা হইল না। তিনি সাধাবাদ করিয়া সম্মত হইলেন। তাঁর কেবল ভয়, রমা কথা কহিতে পরিবে না। সীতারামেরও সে ভয় ছিল। সে যদি না পারে, তবে সকল দিক যাইবে। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ তখন সীতারাম ঘোষণা করিলেন যে, আমােদরবারে গঙগারামের বিচার হইবে । রাজার আজ্ঞানসারে সমস্ত নগরবাসী উপস্থিত হইয়া বিচার দর্শন করিবে। আজ্ঞা পাইয়া অবধারিত দিবসে, সহস্ৰ সহস্র প্রজাবন্দ আসিয়া দরবার পরিপণ করিল। দিল্লীর অন্যাকরণে সীতারামও এক “দরবারে আম” প্রস্তুত করিয়াছিলেন। আজিকার দিন তাহা রাজকৰ্ম্মমচারীদিগের যত্নে সসক্তিজত হইয়াছিল। দিল্লীর মত তাহার রপার চাঁদোবা, মতির ঝালর ছিল না; কিন্তু তথাপি চন্দ্ৰাতপ পট্টবস্ত্রনিৰ্ম্মিমত, তাহাতে জরির কাজ। স্তম্ভ সকল সেইরােপ কার্যকাৰ্যখচিত, পট্টবস্ত্রে আব্বত। নানাচিত্রবণরঞ্জিত কোমল গালিচায় সভামন্ডপ শোভিত, তাহার চারি পাশে বা বিচিত্র-পরিচ্ছদধারী সৈনিকগণ সশস্ত্ৰ শ্রেণীবদ্ধ হইয়া দন্ডায়মান। বাহিরে আশাবারড়ে রক্ষিবগ শান্তি রক্ষা করিতেছে। সভামন্ডপমধ্যে শেবতমমরি নিমিত উচ্চ বেদীর উপর সীতারামের জন্য সবণ খচিত, রৌপ্যনিৰ্ম্মিমত, মত্তাঝালরশোভিত সিংহাসন রক্ষিত হইয়াছে। ক্ৰমে ক্ৰমে দাগ লোকারণ্য হইয়া উঠিল। সভামন্ডপমধ্যে কেবল উচ্চ শ্রেণীর লোকেরাই সথান পাইল। নিম্পন্ন শ্রেণীর লোকে সহস্ৰে সহস্ৰে সভামন্ডপ পরিবেশুিটত করিয়া বাহিরে দাঁড়াইয়া দেখিতে লাগিল । বাতায়ন হইতে এই মহাসমারোহ দেখিতে পাইয়া মহারাজ্ঞী নন্দা দেবী রম্যাকে ডাকিয়া আনিয়া এই ব্যাপার দেখাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন, এই সমারোহের মধ্যস্থানে দাঁড়াইয়া বলিতে পরিবে ? সাহস হইতেছে তা ?” রমা। যদি আমার সর্বামিপদে ভক্তি থাকে, তবে নিশ্চয় পারিব। নন্দা। আমরা কেহ সঙেগ যাইব ? বল ত আমি যাই। রমা। তুমিও কেন আমার সঙ্গে এ অসম্প্রমের সমদ্রে ঝাঁপ দিবে ? কাহাকে যাইতে হইবে না। কেবল একটা কাজ করিও । যখন আমার কথা কহিবার সময় হইবে, তখন যেন মুর ছেলেকে কেহ লইয়া গিয়া আমার নিকট দাঁড়ায়। তাহার মািখ দেখিলে আমার সাহস < নন্দা স্বীকৃত হইয়া বলিল, “এখন সভামধ্যে যাইতে হইবে, একটা কাপড়-চোপড় দর্যস্ত করিয়া নাও । এই বেলা প্ৰস্তুত হও ।” রমা স্বীকৃত হইয়া আপনার মহলে গেল। সেখানে ঘর রন্ধ করিয়া মাটিতে পড়িয়া যন্ত করে ডাকিতে লাগিল, “জয় লক্ষীনারায়ণ! জয় জগদীশবর! আজিকার দিনে আমার যাহা বলিবার, তাহা বলিয়া, আমি যদি তার পর জন্মের মত বোবা হই, তাহাও আমি তোমার কাছে ভিক্ষা করি। আজিকার দিন সভামধ্যে আপনার কথা বলিয়া, আর কখনও ইহজন্মে কথা না কই, তাও তোমার কাছে ভিক্ষা করি। আজিকার দিন মাখ রাখিও । তার পর মরণে আমার কোন দঃখ থাকিবে না।” তার পর বেশ পরিবত্তানের কথাটা মনে পড়িল। রমা ধাত্রীদিগের একখানা সামান্য বস্ত্র চাহিয়া লইয়া, তাই পরিয়া সভামন্ডপে যাইতে প্ৰস্তুত হইল। নন্দা দেখিয়া বলিল, “এ কি এ ?” Տ ՀO