পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दक ब्रष्नाबव्ी —(আবার রামার চক্ষতে জলের ধারা ছটিল,)—বঝি আমার পড়িয়া মরাও ব্যথা হইবে। যদি এই লোকসমারোহের সম্পমাখে বল যে, আমার প্রতি তোমার অবিশ্ববাস নাই—তাহা আমি সেই চিতাই সবগ মনে করিব। মহারাজ ! পরলোকের উদ্ধারকত্তা, ভূদেব তুল্য আমার গরদেব এই সম্পম খে। আমি তাঁহার সম্পমখে, ইস্টদেবকে সাক্ষী করিয়া বলিতেছি, আমি অবিশ্বাসিনী নাহি। যিনি গােরর অপেক্ষাও আমার পজ্যে, যিনি মনষ্য হইয়াও দেবতার অপেক্ষা আমার পাজ্য, সেই পতিদেবতা, আপনি স্বয়ং আমার সম্পম খে—আমি পতিদেবতাকে সাক্ষী করিয়া বলিতেছি, আমি অবিশবাসিনী নাহি। মহারাজ ! এই নারীদেহ ধারণ করিয়া যে কিছ দেবসেবা, ব্ৰাহ্মণসেবা, দান ব্ৰত নিয়ম করিয়াছি, যদি আমি বিশ্বাসঘাতিনী হইয়া থাকি, তবে সে সকলেরই ফলে যেন বঞ্চিত হই। পতিসেবার অপেক্ষা সত্ৰীলোকের আর পণ্য নাই, কায়মনোবাক্যে আমি যে আপনার চরণসেবা করিয়াছি, তাহ। আপনিই জানেন,—আমি যদি অবিশ্বাসিনী হইয়া থাকি, তবে আমি যেন সে পণ্যফলে বঞ্চিত হই। আমি ইহজীবনে যে কিছ, আশা, যে কিছ, ভরসা, যে কিছ কামনা, যে কিছ মানস করিয়াছি—আমি যদি অবিশবাসিনী হইয়া সকলই যেন নিভািফল হয়। মহারাজ ! নারীজন্মে। সর্বামিসন্দশনের তুল্য পণ্যও নাই, নাই—যদি আমি অবিশবাসিনী হইয়া থাকি, যেন ইহজন্মে। আমি সে সখে চিরবণ্ডিত হই। যে পত্রের জন্য আমি এই কলঙ্ক রটাইয়াছি—যাহার তুলনায় জগতে আমার আর কিছই নাই—যদি আমি অবিশ্ববাসিনী হই, আমি যেন সেই পত্রিমখদশনে চিরবঞ্চিত হই। মহারাজ ! আর কি বলিব—যদি আমি অবিশবাসিনী হইয়া থাকি, তবে জন্মে জন্মে যেন নারীজন্ম গ্রহণ করিয়া, জন্মে জন্মে স্বামীপত্রের মখদর্শনে চিরবঞ্চিত হই।" রামা আর বলিতে পারিল না—ছিন্ন লতার মত সভাতলে পড়িয়া গিয়া মচ্ছি তা হইল— ரா ধাত্ৰীগণে ধরাধরি করিয়া অন্তঃপারে বহিয়া লইয়া গেল। ধাত্ৰীক্রোড়স্থ শিশ মার সঙ্গে সঙ্গে কাঁদিতে কাঁদিতে গেল : সভাতলস্থ সকলে আশ্রমোচন করিল। গঙ্গারামের কারচরণস্থিত শঙ্খলে ঝঞ্চনা বাজয়া উঠিল। দশকমন্ডলী বাত্যাপীড়িত সমদ্রের ন্যায় চঞ্চল হইয়া মহান কোলাহল সমাখিত করিল-রক্ষিবগ কিছই নিবারণ করিতে পারিল না। তখন “গঙগারাম কি বলে ? “ ‘গঙগারাম কি এ কথা মিছা বলে ?” “গঙ্গারাম যদি মিছা বলে, তবে আইস, আমরা সকলে মিলিয়া গঙগারামকে খন্ড খন্ড করিয়া ফেলি।” এইরহপ। রব চারি দিক হইতে উঠিতে লাগিল। গঙ্গারাম দেখিল, এই সময়ে লোকের মন ফিরাইতে না পারিলে, তাহার। আর রক্ষা নাই। গঙ্গারাম বদ্ধিমান, বঝিয়াছিল যে, প্রজাবগ, যেমন নিম্পপত্তি করিবে, রাজাও সেই মত করিবেন। তখন সে রাজাকে সম্বোধন করিয়া লোকের মনভুলানি কথা বলিতে আরম্ভ করিল, “মহারাজ ! কথাটা এই যে, সত্ৰীলোকের কথায় বিশ্ববাস করিবেন—না আমার কথায় বিশ্ববাস করিবেন ? প্ৰভু! আপনার এই রাজ্য কি সস্ত্রীলোকে সংস্থাপিত করিয়াছে --না। আমার ন্যায় রাজভৃত্যদিগের বাহবিলে স্থাপিত হইয়াছে ? মহারাজ ! সকল সত্ৰীলোেকই বিপথগামিনী হইতে পারে, রাজরাণীরাও বিপথগামিনী হইয়া থাকেন : রাজরাণী বিপথগামিনী হইলে রাজার কত্তব্য যে, তাঁহাকে পরিত্যাগ করেন। বিশ্ববাসী ভূত্য কখনও বিপথগামী হয় না; তবে সত্ৰীলোকে আপনার দোষ ক্ষালন জন্য ভূত্যের ঘাড়ে চাপ দিতে পারে। এই মহারাণী রাত্ৰিতে কাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়া আমাকে দোষী করিতেছেন, তাহার স্থিরতা—মহারাজ, রক্ষা করা !! রক্ষা কর ।” কথা কহিতে কহিতে গঙ্গারাম কথা সমাপত না করিয়া,-আতিশয় ভীত হইয়া, “মহারাজ, রক্ষা কর! রক্ষা কর!” এই শবদ করিয়া সন্তম্ভিত বিহবিলের মত হইয়া নীরব হইয়া দাঁড়াইয়। রহিল। সকলে দেখিল, গঙগারাম থর-থর কাঁপিতেছে। তখন সমস্ত জনমণ্ডডলী সবিসময়ে সভয়ে চাহিয়া দেখিল—অপব্বমাত্তি! জটাজটবিলম্বিনী, গৈরিকধারিণী, জ্যোতিৰ্ম্মময়ী মাত্তি, সাক্ষাৎ সিংহবাহিনী দােগা তুল্য, ত্রিশােল হস্তে, গঙ্গারামকে ত্রিশলোগ্রভাগে লক্ষ্য করিয়া, প্রখরগমনে তাহার অভিমখে সভামন্ডপ পার হইয়া আসিতেছে! দেখিবামাত্র সেই সাগরবৎ সংক্ষািবধ জনমন্ডলী একেবারে নিস্তব্ধ হইল। গঙ্গারােম একদিন রাত্ৰিতে সে মাত্তি দেখিয়াছিল—আবার এই বিপৎকালে, যখন মিথ্যা প্রবণ8নার দবারা নিরপরাধিনী রামার সববনাশ করিতে সে উদ্যত, সেই সময়ে সেই মাত্তি দেখিয়া, চন্ডী তাহাকে বধ করিতে আসিতেছেন বিবেচনা করিয়া, ভয়ে কাতর হইয়া “রক্ষা কর! রক্ষা কর!” শব্দ করিয়া উঠিল। এ দিকে রাজা, ও দিকে চন্দ্রচড়ি, SS8