পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नौडाब्राभ কামানের নিকট দাঁড়াইয়া স্বীকার করিয়াছিলেন যে, আমি যাহা খাঁজি, তাহা পাইব । সে অমল্য সামগ্রী আমাকে দিন—সেই মল্যে আজ গঙ্গারামের জীবন আপনার নিকট বেচিব। জয়ন্তী। কি সে অমল্য সামগ্ৰী মহারাজ ? আপনি রাজ্য পাইয়াছেন। রাজা। যাহার জন্য রাজ্য ত্যাগ করিতে পারি, তাই চাহিতেছি । জয়ন্তী। সে কি মহারাজ ? রাজা। শ্ৰী নামে আমার প্রথম মহিষী আমার জীবনস্বরাপ। আপনি দেবী, সব দিতে পারেন। আমার জীবন আমায় দিয়া, সেই মল্যে গঙগারামের জীবন কিনিয়া লাউন। জয়ন্তী। সে কি মহারাজ। আপনার ন্যায় ধৰ্ম্মমাত্মা রাজাধিরাজের জীবনের সঙেগ সেই নরাধম পাপাত্মার জীবনের কি বিনিময় হয় ? মহারাজ ! কাণা কড়ির বিনিময়ে রত্নাকর ” রাজা । মা ! জননী যত দেন, ছেলে কি মাকে কখনও তত দিতে পারে! জয়ন্তী।--মহারাজ ! আপনি আজ অন্তঃপার-দাবার সকল মন্ত রাখিবেন; আর অন্তঃপরের প্রহরীদিগকে আজ্ঞা দিবেন, ত্রিশলে দেখিলে যেন পথ ছাড়িয়া দেয়। আপনার শয্যাগহে আজি রাত্ৰিতেই মাল্য পৌছিবে। গঙগারামের মন্ডির হািকম হৌক । রাজা হষে অভিভূত হইয়া বলিলেন, “গঙ্গারামের এখনই মাক্তি দিতেছি।” এই বলিয়া অনচরবগকে সেইরােপ আজ্ঞা দিলেন। জয়ন্তী বলিলেন, “আমি এই অনািচরদিগের সঙ্গে গঙ্গারামের কারাগারে যাইতে পারি কি ?” রাজা। আপনি যাহা ইচ্ছা করিতে পারেন, কিছতেই আপনার নিষেধ নাই। পgম পরিচ্ছেদ অন্ধকারে কাপের ন্যায় নিম্পন, আদ্র, বাযশান্য কারাগহমধ্যে গঙ্গারাম শঙ্খলবদ্ধ হইয়া একা পড়িয়া আছে। সেই নিশীথকালেও তাহার নিদ্ৰা নাই—যে পৰ্য্যন্ত সে শনিয়াছে যে, তাহাকে শলে যাইতে হইবে, সেই পৰ্যন্ত আর সে ঘামায় নাই—আহার-নিদ্রা সকলই বন্ধ। এক দন্ডে মরা যায়, মাতু্য তত বড় কঠিন দন্ড নহে; কিন্তু কারাগাহে একাকী পড়িয়া দিবারাত্র সম্পম খেই মােত্যুদন্ড, ইতি ভাবনা করার অপেক্ষা গরতের দন্ড আর কিছই নাই। গঙ্গারাম পলিকে পলকে শলে যাইতেছিল। দন্ডের আর তাহার কিছর অধিক বাকি নাই। ভাবিয়া ভাবিয়া, চিত্তবাত্তি সকল প্রায় নিববাপিত হইয়াছিল। মন অন্ধকারে ডুবিয়া রহিয়াছিল--ক্লেশ অনভব করিবার শক্তি পয্যন্ত যেন তিরোহিত হইয়াছিল। মনের মধ্যে কেবল দটি ভােব এখনও জাগরিত ছিল -ভৈরবীকে ভয়, আর রম্যার উপর রাগ। ভয়ের অপেক্ষা, এই রাগই প্রবল। গঙগারাম আর রামার প্রতি আসক্ত নহে, এখন রমার তেমন আন্তরিক শত্র আর কেহ নহে। গঙ্গারাম এখন রমাকে সম্মখে পাইলে নখে বিদীর্ণ করিতে প্ৰস্তুত। গঙ্গারামের যখন কিছ: চিন্তাশক্তি হইল, তখন কি উপায়ে মরিবাব সময়ে রামার সববনাশ করিয়া মরিতে পরিবে, গঙগারাম তাহাই ভাবিতেছিল। শালতলে দাঁড়াইয়া রামার সম্পবন্ধে কি আশলীল অপবাদ দিয়া যাইবে, গঙগারাম তাহাই কখন কখন ভাবিত। অন্য সময়ে জড়পিন্ডের মত সন্তম্পিভত হইয়া পড়িয়া থাকিত। কেবল মধ্যে মধ্যে বাহিরে অভিষেকের উৎসবের মহৎ কোলাহল শনিত। যে পাচক ব্রাহ্মণ প্রত্যহ তাহার নান ভাত লইয়া আসিত, তাহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া গঙ্গারাম উৎসবের বক্তান্ত শনিয়াছিল। শনিল যে, রাজ্যের সমস্ত লোক অতি বহৎ উৎসবে নিমগন—কেবল সেই একা অন্ধকারে আদ্র ভূমিতে মষিকদল্ট হইয়া, কীটপতঙ্গাপীড়িত হইয়া, শঙ্খলভার বহন করিতেছে। মনে মনে বলিতে লাগিল, রমার কবে এই রকম সন্থান মিলিবে! যেমন অন্ধকারে বিদ্যুৎ জাবলে, তেমনি গঙ্গারামের একটা কথা মনে পড়িত, যদি শ্ৰী বাঁচিয়া থাকিত ! শ্ৰী একবার প্রাণভক্ষা করিয়া লইয়াছিল, আবার ভিক্ষা চাহিলে কি ভিক্ষা পাইত না! আমি যত পাপী হই না কেন, শ্ৰী কখনও আমাকে পরিত্যাগ করিত না। এমন ভগিনীও মরিল ! দাই প্রহর রাত্ৰিতে ঝঞ্চনা বাজাইয়া কারাগাহের বহিরের শিকল খলিল। গঙ্গারামের శా- রাত্ৰিতে কেন শিকল খালিতেছে! আরও কিছ নািতন বিপদ আছে না কি ? অগ্রে রাজপরিষেরা প্ৰদীপ লইয়া প্রবেশ করিল। গঙ্গারাম স্তম্পিভত হইয়া তাহদের প্রতি 为R9