পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दका ज्ञष्नाबव्ी চালা তুলিয়া কুলাইতে পারিলেন না। বাকিদার, তহশীলদার, উভয়েই দেশ ছাড়িয়া পলাইতে লাগিল। যে বাকিদার নয়, সেও সঙ্গে সঙ্গে পলাইতে লাগিল । তাই বলিতেছিলাম যে, আগে আগােন ত জীবলিয়াই ছিল, এখন ঘর পড়িল; যদি শ্ৰী না আসিত, তবে সীতারামের এত অবনতি হইত কি না জানি না; কেন না, সীতারাম ত মনে মনে স্থির করিয়াছিলেন যে, রাজ্যশাসনে মন দিয়া শ্ৰীকে ভুলিবেন—সে কথা যথাস্থানে বলিয়াছি। অসময়ে আসিয়া শ্ৰী দেখা দিল, সে অভিপ্রায় বালির বাঁধের মত আসক্তির বেগে ভাসিয়া গেল। রাজ্যে মন দিলেই যে সব আপদ ঘচিত, তাহা নাই বলিলাম, কিন্তু শ্ৰী যদি আসিয়াছিল, তবে সে যদি নন্দার মত রাজপরীমধ্যে মহিষী হইয়া থাকিয়া নন্দার মত রাজার রাজধাম্পেমার সহায়তা করিত, তাহা হইলেও সীতারামের এতটা অবনতি হইত না বোধ হয়; কেন না, কেবল ঐশবযািমদে যে অবনতিটকু হইতেছিল, শ্ৰী ও নন্দার সাহায্যে সেট কুরও কিছ: খবব তা হইত। তা শ্ৰী, যদি রাজপরীতে মহিষী না থাকিয়া, চিত্তবিশ্রামে আসিয়া উপপত্নীর -অত রহিল, তবে সন্ন্যাসীর মত না থাকিয়া, সেই মত থাকিলেই এতটা প্ৰমাদ ঘটিত না। আকাঙক্ষা পণ্য হইলে তাহার মোহিনী শক্তির অনেক লাঘব হইত। কিছ দিনের পর রাজার চৈতন্য হইতে পারিত। তা, যদি শ্ৰী সন্ন্যাসিনী হইয়াই রহিল, তবে সোজা রকম সন্ন্যাসিনী হইলেও এ বিপদ হইত না। কিন্তু এই ইন্দ্রাণীর মত সন্ন্যাসিনী বাঘছালে বসিয়া বাক্যে মধ্যবমিট করিতে থাকিবে, আর সীতারাম কুকুরের মত তফাতে বসিয়া মািখপানে চাহিয়া থাকিবে—অথচ সে সীতারামের সত্ৰী ! পাঁচ বৎসর ধরিয়া সীতারাম তাহার জন্য প্রায় প্রাণপাত করিয়াছিলেন। লাগিয়াছিল মাত্র,-—এখন ঘর পড়িল! সীতারাম আর সহ্য করিতে না পারিয়া মনে মনে সঙকলাপ করিলেন, শ্রীর উপর বলপ্রয়োগ করিবেন। তবে যাকে ভালবাসে, তাহার উপর বলপ্রয়োগ বড় পামরেও পারে না । শ্ৰীীর উপর রাজার যায় নাই। তাই বলপ্রয়োগে ইচ্ছক হইয়াও সীতারাম তাহা করিতেছিলেন না। বলপ্রয়োগ করিব কি না, এ কথার মীমাংসা করিতে সীতারামের প্রাণ বাহির হইতেছিল। যত দিন না সীতারাম একটা এদিক ওদিক স্থির করিতে পারিলেন, তত দিন সীতারাম এক প্রকার জ্ঞানশন্যাবস্থায় ছিলেন। সেই ভয়ানক সময়ের বন্ধিবিপৰ্য্যয়ে রাজপরিষেরা শহলে গেল, আদায় তহশীলের ভারপ্রাপিত কৰ্ম্মমচারীরা কারাগারে গেল, বাকিদারেরা আবদ্ধ হইল, প্রজা সব পলাইল, রাজ্য ছারখারে যাইতে লাগিল । শেষ সীতারাম সিথর করিলেন, শ্রীর প্রতি বলপ্রয়োগই করিবেন। কথাটা মনোমধ্যে স্থির হইয়া কায্যে পরিণত হইতে না হইতেই অকস্মাৎ এক গোলযোগ উপস্থিত হইল। চন্দ্রচড়ি ঠাকুর রাজাকে আর একদিন পাকড়া করিয়া বলিলেন, “মহারাজ ! তীৰ্থ পৰ্যটনে যাইব ইচ্ছা করিয়াছি। আপনি অনািমতি করিলেই যাই।” কথাটা রাজার মাথায় যেন বজাঘাতের মত পড়িল। চন্দ্রচড়ি গেলে নিশ্চয়ই শ্ৰীকে পরিত্যাগ করিতে হইবে, নয় রাজ্য পরিত্যাগ করিতে হইবে। অতএব রাজা চন্দ্রচড়ি ঠাকুরকে তীর্থযাত্রা হইতে নিবত্ত করিতে চেন্টা করিতে লাগিলেন। এখন চন্দ্ৰচড় ঠাকুরের স্থির সিদ্ধান্ত এই যে, এ পাপ রাজ্যে আর বাস করিবেন না, এই পাপিষ্ঠ রাজার কম আর করিবেন না। অতএব তিনি সহজে সম্মত হইলেন না। অনেক কথাবাৰ্ত্ত হইল। চন্দ্রচড়ি অনেক তিরস্কার করিলেন। রাজাও অনেক উত্তর প্রত্যুত্তর করিলেন। শেষে চন্দ্রচড় থাকিতে সক্ষমত হইলেন। কিন্তু কথায় কথায় অনেক রাত্ৰি হইল। কাজেই রাজা সে দিন চিত্তবিশ্রামে গেলেন না। এদিকে চিত্ত্ববিশ্রামে সেই রাত্রে একটা কান্ড উপস্থিত হইল। সেই দিন দৈবগতিকে চিত্তবিশ্রামের দ্বারদেশে এক জন ভৈরবী আসিয়া দশন দিল। এখন চিত্তবিশ্রাম ক্ষদ্র প্রমোদগাহ হইলেও রাজগােহ ; জনকত দবারবানও দাবারদেশে আছে। ভৈরবী দবারবানদিগের নিকট পথ ভিক্ষা করিল। ১ N8O