পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেতা । AVV9 দিন পাঠানদিগের বিদ্রোহীচরণ আরম্ভ হয়। দায়ুদ খ নিজ শোণিতে সে বিদ্রোহিতার প্রারশ্চিত্ত করেন ;—সেই অবধি ষে যে পাঠান সেই কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইবেন, সেই সেই পাঠানই সেইরূপ কৰ্ম্মের ফল ভোগ করিবেন।” মাসুমী আর সহ করিতে পারিলেন না, নয়নদ্বয় হইতে অগ্নিকণা বাহির হইতে লাগিল ৷ ভীষণস্বরে বলিলেন,— “হিন্দু ! তোমার জীবন মৃত্যু আমার হস্তে, তোমার কি জীবনের অভিলাষ নাই, যে আমার সম্মুথে এইরূপ কথা কহিতেছ?” নিৰ্ভীক ইন্দ্রনাথ সেইরূপ সগৰ্ব্বে উত্তর করিলেন,— * আমার জীবনের সুখের দ্রব্য, মায়ার দ্রব্য, ভালবাসার দ্রব্য, এক্ষণও সকলই আছে ;–কিন্তু এসকল থাকিতেও যখন তোমাদের হস্তে পড়িয়াছি, তখন জীবনের অtশা রাখি না।” মাসুমী জিজ্ঞাসা করিলেন, " কেন ?” ইন্দ্রনাথ উত্তর করিলেন, “সাহসী পুরুষ শক্রকে ক্ষমা করিতে পারে,— যাহারা জয় নিশ্চয় জানেন, তাহারা শক্রকে ক্ষমা করিতে পারেন। কিন্তু যাহারা ভীরু, যাহার নিজের জয় সংশয় করেন, তাহারা শক্রকে কখনও ক্ষমা করিতে পারেন না, পাঠানের হস্তে আমি ক্ষমার প্রত্যাশা করি না ।” অনেকক্ষণ কথা কহিতে কহিতে ইন্দ্রনাথের হীনবল শরীর ক্রমশঃ অবসন্ন হইতেছিল, বিশেষতঃ শেষে যে কথা কহিতেছিলেন তাহতে বক্ষঃ হইতে পুনরায় শোণিত-স্রোত নির্গত হইতে লাগিল। মাসুমী ক্রোধে অন্ধ হইয়া বলিলেন, “ পামর ! কৌশল-বাক্যের দ্বারা ক্ষমা পাইবার প্রত্যাশা করিও না ।” ইন্দ্রনাথ পুনরায় সগৰ্ব্বে উত্তর করিলেন, “আমি কোন প্রত্যাশা করি না,—কেবল এই প্রত্যাশা করি যে, জল্লাদ অাপন কাৰ্য্য শীঘ্রই নিম্পন্ন করিবে। আমার শরীর অবসন্ন হইয়া আসিতেছে, বিলম্ব করিলে যোদ্ধা কিরূপে ময়ে তাহা দেখিতে পাইবে না।” মৗসুমী উত্তর করিলেন, “ তাহাই হইবে ; জল্লাদ! বিলম্বে কাৰ্য্য নাই ।” কিন্তু জল্লাদকে সে ভীষণ কাৰ্য্য সম্পাদন করিতে হইল না। ইন্দ্রনাথের ক্ষত হইতে রক্তস্রোত ক্রমশঃই বৃদ্ধি পাইতে লাগিল, ত্বরায় শরীর অবসন্ন হইয়া আসিল, পুনরায় চেতনশূন্য হইয়া ধরাতলে নিপতিত হইলেন । ,