একদিন সে তাহারই মত একজন দরিদ্রকে কাছে পাইয়া বলিল, “বাপু, তোমরা এখানে খাও কি করিয়া?”
লোকটা একরকম বোকা ধরনের— না হইলে উপহাস করিত! সে বলিল, “চাকরি করিয়া খাটিয়া খাই! কলিকাতায় রোজগারের ভাবনা কি?”
সুরেন্দ্র বলিল, “আমাকে একটা চাকরি করিয়া দিতে পার?”
সে কহিল, “তুমি কি কাজ জান?”
সুরেন্দ্রনাথ কোন কাজই জানিত না, তাই সে চুপ করিয়া ভাবিতে লাগিল।
“তুমি কি ভদ্রলোক?” সুরেন্দ্র মাথা নাড়িল।
“তবে লেখাপড়া শেখনি কেন?”
“শিখেছি।”
সে লোকটা একটু ভাবিয়া বলিল, “তবে ঐ বড় বাড়ীতে যাও। ওখানে বড়লোক জমিদার থাকে— একটা কিছু করিয়া দিবেই।” এই বলিয়া সে চলিয়া গেল।
সুরেন্দ্রনাথ ফটকের কাছে আসিল। একবার দাঁড়াইল, আবার পিছাইয়া গেল, আবার ফিরিয়া আসিল— আবার গেল। সেদিন আর কিছু হইল না। পরদিনও ঐরূপ করিয়া কাটিল। দুই দিন ধরিয়া সে ফটকের নিকট উমেদারি করিয়া তৃতীয় দিবসে সাহস সঞ্চয় করিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল। সম্মুখে একজন ভৃত্য দাঁড়াইয়া ছিল। সে জিজ্ঞাসা করিল, “কি চান?”
“বাবুকে—”
“বাবু বাড়ী নেই।”