ফটোগ্রাফ্। এ সকল অপরের পক্ষে যাহাই হউক, সুরেন্দ্রের নিকট নূতন নহে। কারণ, তাহার পিতার বাটীও দরিদ্রের কুটীর নহে; আর যাহাই হউক, সে দরিদ্র পিতার আশ্রয়ে এত বড় হয় নাই। সুরেন্দ্র ভাবিতেছিল– সেই লোকটির কথা, যাহার সহিত দেখা করিতে, অনুনয়-বিনয় করিতে যাইতেছে,– তিনি কি প্রশ্ন করিবেন, এবং সে কি উত্তর দিবে!
কিন্তু এত ভাবিবার সময় নাই– কর্ত্তা সম্মুখে বসিয়াছিলেন; সুরেন্দ্রনাথকে প্রশ্ন করিলেন, “কি প্রয়োজন?”
আজ তিন দিন ধরিয়া সুরেন্দ্র এই কথাই ভাবিতেছিল, কিন্তু এখন সব ভুলিয়া গেল,— বলিল, “আমি–আমি–”
ব্রজরাজ লাহিড়ী পূর্ব্ববঙ্গের জমিদার। মাথায় দুই চারিগাছা চুলও পাকিয়াছে–বাতিকে নহে, ঠিক বয়সেই পাকিয়াছিল। বড়লোক, অনেক দেখিয়াছিলেন; তাই চট্ করিয়া সুরেন্দ্রনাথকে অনেকটা বুঝিয়া লইলেন, কহিলেন, “হাঁ বাপু, কি চাও তুমি?”
“কোন একটা–”
“কি একটা?”
“চাকরি–।” ব্রজরাজবাবু মৃদু হাসিয়া বলিলেন, “আমি চাকরি দিতে পারি এ সংবাদ তোমাকে কে দিল?”
“পথে একজনের সহিত দেখা হইলে, আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, সেই আপনার কথা–”
“ভাল। তোমার বাড়ী কোথায়?”
“পশ্চিমে।”
“সেখানে কে আছে?” সুরেন্দ্রনাথ সব কথা বলিল।