ভাবিতেছিল। বিন্দু কহিল, “মাষ্টারমশায়, বড়দিদি বল্চেন যে, আপনি ছোটদিদিকে কিছু পড়ান নি কেন? মাষ্টার-মহাশয় শুনিতে পাইল না। এবার বিন্দু জোরে বলিল, “মাষ্টারমশায়?”
“কি?”
“বড়দিদি বল্চেন–”
“কি বলেচেন?”
“ছোটদিদিকে পড়ান্নি কেন?”
অন্যমনস্ক হইয়া সে জবাব দিল– “ভাল লাগে না।”
বিন্দু ভাবিল, মন্দ নয়। একথা সে মাধবীকে জানাইল। মাধবীর রাগ হইল, সে নীচে আসিয়া দ্বারের অন্তরালে থাকিয়া বিন্দুকে দিয়া বলাইল, “ছোটদিদিকে একেবারে পড়ান্নি কেন?” কথাটা বার দুই তিন জিজ্ঞাসা করিবার পরে, সুরেন্দ্রনাথ কহিল, “আমি পারব না।”
মাধবী ভাবিল, এ কেমন কথা!
বিন্দু বলিল, “তবে আপনি কি জন্য আছেন?”
“না থাক্লে কোথা যাব?”
“তবে পড়ান না কেন?”
সুরেন্দ্রনাথের এবার চৈতন্য হইল! ফিরিয়া বসিয়া কহিল, “কি বলচ?” বিন্দু এতক্ষণ ধরিয়া কি কহিতেছিল, তাহাই আবার আবৃত্তি করিল। সুরেন্দ্রনাথ তখন কহিল, “সে ত রোজ পড়ে!”
“পড়ে, কিন্তু আপনি দেখেন কি?”
“না। আমার সময় হয় না।”
“তবে এ বাড়িতে কেন আছেন?” সুরেন্দ্র চুপ করিয়া তাহা ভাবিতে লাগিল।