বনবাণী
অক্লান্ত মঞ্জরী ঐশ্বর্যে দিল ভরিয়ে। নবীনের শেষ জয়ধ্বনি তোমার বীরকণ্ঠে। সেই ধ্বনি আজ আকাশকে পূর্ণ করল; বিষাদের ম্লানতা দূর করে দিলে। অরণ্যভূমির শেষ আনন্দিত বাণী তুমিই শুনিয়ে দিলে যাবার পথের পথিককে; বললে, ‘পুনর্দর্শনায়।’ তোমার আনন্দের সাহস কঠোর বিচ্ছেদের সমুখে দাঁড়িয়ে।
ক্লান্ত যখন আম্রকলির কাল
দূরের ডাক এসেছে। পথিক, তোমাকে ফেরাবে কে। তোমার আসা আর তোমার যাওয়াকে আজ এক করে দেখাও। যে পথ তোমাকে নিয়ে আসে সেই পথই তোমাকে নিয়ে যায়, আবার সেই পথই ফিরিয়ে আনে। হে চিরনবীন, এই বঙ্কিম পথেই চিরদিন তোমার রথযাত্রা; যখন পিছন ফিরে চলে যাও সেই চলে-যাওয়ার ভঙ্গিটি আবার এসে মেলে সামনের দিকে ফিরে-আসায়, শেষ পর্যন্ত দেখতে পাই নে- হায়হায় করি।
এখন আমার সময় হল[১]
বিদায়বেলায় অঞ্জলি যা শূন্য করে দেয় তা পূর্ণ হয় কোন্খানে সেই কথাটা শোনা যাক।
এ বেলা ডাক পড়েছে কোন্খানে[২]
আসন্ন বিরহের ভিতর দিয়ে শেষ বারের মতো দেওয়া-নেওয়া হয়ে যাক। তুমি দিয়ে যাও তোমার বাহিরের দান, তোমার উত্তরীয়ের সুগন্ধ, তোমার বাঁশির গান, আর নিয়ে যাও এই অন্তরের বেদনা আমার নীরবতার ডালি থেকে।
তুমি কিছু দিয়ে যাও
খেলা-শুরুও খেলা, খেলা-ভাঙাও খেলা। খেলার আরম্ভে হল বাঁধন, খেলার শেষে হল বাঁধন-খোলা। মরণে বাঁচনে হাতে হাতে ধরে এই খেলার নাচন। এই খেলায় পুরোপুরি যোগ দাও; শুরুর সঙ্গে শেষের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলিয়ে নিয়ে জয়ধ্বনি করে চলে যাও।
আজ খেলা-ভাঙার খেলা খেলবি আয়[৩]
১৯২