পাতা:বনবাণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বনবাণী

যে মৌন নিজেরে চায়
সমুদ্রের নীলিমায়,
অন্তহীন সেই মৌন উচ্ছ্বসিল নীলগুচ্ছ ফুলে,
দুর্গম রহস্য তার উঠিল সহজ ছন্দে দুলে।


আসন্ন মিলনাশ্বাসে বধূর কম্পিত তনুখানি
নীলাম্বর-অঞ্চলের গুণ্ঠনে সঞ্চিত করে বাণী।
মর্মের নির্বাক্ কথা
পায় তার নিঃসীমতা
নিবিড় নির্মল নীলে, আনন্দের সেই নীল দ্যুতি
নীলমণিমঞ্জরীর পুঞ্জে পুঞ্জে প্রকাশে আকুতি।


অজানা পান্থের মতো ডাক দিলে অতিথির ডাকে—
অপরূপ পুষ্পোচ্ছ্বাসে হে লতা, চিনালে আপনাকে।
বেল জুঁই শেফালিরে
জানি আমি ফিরে ফিরে-
কত ফাল্গুনের কত শ্রাবণের আশ্বিনের ভাষা
তারা তো এনেছে চিত্তে, রঙিন করেছে ভালোবাসা।


চাঁপার কাঞ্চন-আভা সে-যে কার কণ্ঠস্বরে সাধা,
নাগকেশরের গন্ধ সে-যে কোন বেণীবন্ধে বাঁধা।
বাদলের চামেলি-যে
কালো আঁখি-জলে ভিজে,
করবীর রাঙা রঙ কঙ্কণঝংকার সুরে মাখা,
কদম্বকেশরগুলি নিদ্রাহীন বেদনায় আঁকা।

২৫