পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল।

আজ রাত্রি ভোর হ’লে—কারে আর পিতা বলে
ডাকিবি, কাহার কোলে হাসিবি, খেলিবি?
জীবধাত্রী বসুন্ধরে!—তোমার কোলের পরে
অনাথা বালিকা মোর করিনু অর্পণ।
দিনকর। নিশাকর! আহা এ বালার পর
তোমাদের স্নেহদৃষ্টি করিও বর্ষণ!
শুন সব দিক‍্বালা! বালিকা না পায় জ্বালা
তোমরা জননীস্নেহে করিও পালন!
শৈলবালা! বিশ্বমাতা! জগতের স্রষ্টা পাতা!
শত শত নেত্রবারি সঁপি পদতলে
বালিকা অনাথা বোলে, স্থান দিও তব কোলে
আবৃত করিও এরে মেহের আঁচিলে!
মুছ মাগো অশ্রুজল! আর কি কহিব বল!
অভাগা পিতারে ভোল জম্মের মতন।
আটকি আসিছে স্বর!—অবসন্ন কলেবর
ক্রমশঃ মুদিয়া মাগো! আসিছে নয়ন!
মুষ্টিবদ্ধ করতল,—শোনিত হইছে জল,
শরীর হইয়া আসে শীতল পাষাণ।
এই—এই শেষবার—কুটারের চারিধার
দেখে লই! দেখে লই মেলিয়া নয়ান!