পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বন-ফুল।

“সুন্দরি! সুন্দরি!” হায়! উত্তর নাহিক পায়
আবার ডাকিল ধীরে “সুন্দরি! সুন্দরি!”
শব্দ চারিদিকে ছুটে, প্রতিধ্বনি জাগি উঠে,
কুটীর গম্ভীরে কহে “সুন্দরি! সুন্দরি!”
তবুও উত্তর নাই, নীরব সকল ঠাঁই
এখনো পৃথিবী ধরা নীরবে ঘুমায়!
নীরব পরণশালা, নীরব ষােড়শী বালা
নীরবে সুধীর বায়ু লতারে দুলায়!
পথিক চমকি প্রাণে, দেখিল চৌদিক পানে
কুটীরে ডাকিছে কেও “কমলা! কমলা!”
অবাক হইয়া রহে, অস্ফুটে কে ও গাে কহে?
সুমধুর স্বরে যেন বালকের গলা!
পথিক পাইয়া ভয়, চমকি দাঁড়ায়ে রয়
কুটীরের চারি ভাগে নাই কোন জন!
এখনো অস্ফুটস্বরে, ‘কমলা! কমলা!’ ক’রে
কুটীর আপনি যেন করে সম্ভাষণ!
কে জানে কাহাকে ডাকে,কে জানে কেন বা ডাকে
কেমনে বলিব কেবা ডাকিছে কোথায়?
সহসা পথিকবর, দেখে দণ্ডে করি ভর
‘কমলা! কমলা’ বলি শুক গান গায়!