পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
বন-ফুল।

ছাড়ি বালিকার কর, এস্ত উঠে পান্থবর
দ্রুত গতি চলিলেন তটিনীর ধারে,
নদীর শীতল নীরে, ভিজায়ে বসন ধীরে,
ফিরি আইলেন পুনঃ কুটীরের দ্বারে।
বালিকার মুখে চোকে, শীতল সলিল সেকে
সুধীরে বালিকা পুনঃ মেলি নয়ন।
মুদিতা নলিনী কলি, মরম হুতাশে জ্বলি
মূরছি সলিল কোলে পড়িলে যেমন—
সদয়া নিশার মন, হিম সেঁচি সারাক্ষণ
প্রভাতে ফিরায়ে তারে দেয়গো চেতন।
মেলিয়া নয়ন পুটে, বালিকা চমকি উঠে
একদৃষ্টে পথিকেরে করে নিরীক্ষণ
পিতা মাতা ছাড়া কারে, মানুষে দেখেনি হারে
বিস্ময়ে পথিকে তাই করিছে লোকন!
আঁচল গিয়াছে খ’সে, অবাক্ রয়েছে ব’সে
বিস্ফারি পথিক পানে যুগল নয়ন!
দেখেছ কভু কেহ কি, এহেন মধুর আঁখি?
স্বর্গের কোমল জ্যোতি খেলিছে নয়নে
মধুর স্বপনে মাথা, সারল্য প্রতিমা আঁকা
‘কে তুমি গো?’ জিজ্ঞাসিছে যেন প্রতিক্ষণে