পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল।
১৫

পৃথিবী ছাড়া এ আঁখি, স্বর্গের আড়ালে থাকি
পৃথ্বীরে জিজ্ঞাসে ‘কে তুমি? কে তুমি’
মধুর মোহের ভুল, এ মুখের নাই তুল
স্বর্গের বাতাস বহে এ মুখটি চুমি!
পথিকের হৃদে আসি, নাচিছে শোণিত রাশি
অবাক্ হইয়া বসি রয়েছে সেথায়!
চমকি ক্ষণেক পরে, কহিল সুধীর স্বরে,
বিমোহিত পান্থবর কমলা-বালায়!
“সুন্দরি, আমিগো পান্থ, দিকভ্রান্ত, পথশ্রান্ত,
উপস্থিত হইয়াছি বিজন কাননে!
কাল হ’তে ঘুরি ঘুরি, শেষে এ কুটীর পুরী
আজিকার নিশি শেযে পড়িল নয়নে!
বালিকা! কি কব আর, আশ্রয় তোমার দ্বার
পান্থ পথ হারা আমি করিগো প্রার্থনা
জিজ্ঞাসা করিগো শেষে, মৃতে লয়ে ক্রোড়দেশে
কে তুমি কুটীর মাঝে বসি সুধাননা?”
পাগলিনী প্রায় বালা, হৃদয়ে পাইয়া জ্বালা
চমকিয়া বসে যেন জাগিয়া স্বপনে;
পিতার বদন পরে, নয়ন নিবিষ্ট ক’রে
স্থির হ’য়ে বসি রয় ব্যাকুলিত মনে।