পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
বন-ফুল।

পথিকেরো আঁখিদ্বয়, হ’ল আহা অশ্রুময়
মুছিয়া পথিক তবে ধীরে ধীরে বলে!
আইস আমার সাথে, স্বর্গরাজ্য পাবে হাতে
দেখিতে পাইবে তথা পিতায় মাতায়।
নিশা হ’ল অবসান, পাখীরা করিছে গান
ধীরে ধীরে বহিতেছে প্রভাতের বায়।
আঁধার ঘোমটা তুলি, প্রকৃতি নয়ন ধুলি
চারিদিক ধীরে যেন করিছে বীক্ষণ—
আলোকে মিশিল তারা, শিশিরের মুক্তাধারা
গাছ পালা পুষ্প লতা করিছে বর্ষণ!
হোথা বরফের রাশি, মৃত দেহ রেখে আসি
হিমানি ক্ষেত্রের মাঝে করায়ে শয়ান,
এই লয়ে যাই চ’লে মুছে ফেল অশ্রুজলে
“অশ্রুবারি ধারে তাহা পূরেছে নয়ান!”
পথিক এতেক কয়ে, মৃত দেহ তুলে লয়ে
হিমানি ক্ষেত্রের মাঝে করিল প্রোথিত।
কুটীরেতে ধীরি ধীরি, আবার আইল ফিরি
কত ভাবে পথিকের চিত্ত আলোড়িত।
ভবিষ্যত কলপনে, কত কি আপন মনে
দেখিছে, হৃদয় পটে আঁকিতেছে কত—