পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল।

আজি নিশীথিনী কাঁদে, আঁধারে হারায়ে চাঁদে
মেঘ ঘোমটায় ঢাকি কবরীর তারা।


কল্পনে! কুটীর কার তটিনীর তীরে
তরুপত্র ছায়ে ছায়ে, পাদপের গায়ে গায়ে
ডুবায়ে চরণ-দেশ স্রোতস্বিনী নীরে?
চৌদিকে মানব-বাস নাহিক কোথায়
নাহি জন-কোলাহল, গভীর বিজন-স্থল
শান্তির ছায়ায় যেন নীরবে ঘুমায়।
কুসুম-ভূষিত-বেশে, কুটীরের শিরোদেশে
শোভিছে লতিকা-মালা প্রসারিয়া কর,
কুসুমস্তবক রাশি, দুয়ার উপরে আসি
উঁকি মারিতেছে যেন কুটীর ভিতর!
কুটীরের একপাশে, শাখা-দীপ[১] ধূমশ্বাসে
স্তমিত আলোক শিখা করিছে বিস্তার।
অস্পষ্ট আলোক তায় আঁধার মিশিয়া যায়
মান ভাব ধরিয়াছে গৃহ-ঘর দ্বার!

  1. হিমালয়ে এক প্রকার বৃক্ষ আছে, তাহার শাখা অগ্নিসংযুক্ত হইলে দীপের ন্যায় জ্বলে তথাকার লোকেরা উহা প্রদীপের পরিবর্ত্তে ব্যবহার করে।