পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল
৭১

দাঁড়াইয়া দূরে—দূরে নিরখিয়া চারিদিক পান
পৃথিবীর ধ্বংসরাশি,রহিয়াছে হােয়ে মিয়মাণ?

শ্মশানের নাই প্রাণ যেন আপনার
শুষ্ক তৃণরাজি তার ঢাকিয়াছে বিশাল বিস্তার!
তৃণের শিশির চুমি বহেনাকে। প্রভাতের বায়
কুসুমের পরিমল ছড়াইয়া হেথায় হােথায়।

শ্মশানে আঁধার ঘাের ঢালিয়াছে বুক।
হেথা হােথা অস্থিরাশি ভস্মমাঝে লুকাইয়া মুখ!
পরশিয়া অস্থিমালা তটিনী আবার সরি যায়
ভরাশি ধুয়ে ধুয়ে, নিভাইয়া অঙ্গার শিখায়!

বিকট দশন মেলি মানব কপাল—
ধ্বংসের স্মরণ স্তুপ, ছড়াছড়ি দেখিতে ভয়াল!
গভীর আঁখি কোটর, আঁধারেরে দিয়েছে আবাস
মেলিয়া দশন পাতি পৃথিবীর করে উপহাস!

মানব কঙ্কাল শুয়ে ভাস্মের শয্যায়
কাণের কাছেতে গিয়া বায়ু কত কথা ফুসলায়!
তটিনী কহিছে কাণে উঠ! উঠ! উঠ নিদ্রা হোতে
ঠেলিয়া শরীর তার ফিরে ফিরে তরঙ্গ আগাতে!