পাতা:বাঁশরী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বাঁশরী রেশমের থলি থেকে একটা পান্নার কষ্ঠী, হীরের ব্রেস্‌লেট্‌, মুক্তোবসানো ব্রোচ্‌ বের করে দেখিয়ে আবার থলিতে পূরে সোমশংকরের কোলে ফেলে দিলে।

সোমশংকর

 বাঁশি, তুমি জান আমার মুখে কথা জোগায় না। যা বলতে পারলেম না তার মানে নিজে বুঝে নিয়ো।

বাঁশরী

 সব কথাই আমার জানা, মানে আমি বুঝি। এখন যাও, তোমাদের সময় হল।

সোমশংকর

 যেয়ো না, বাঁশি। ভুল বুঝে না আমাকে। আমার শেষ কথাটা শুনে যাও। আমি জঙ্গলের মানুষ। শহরে এসে কলেজে পড়ার আরম্ভের মুখে প্রথম তোমার সঙ্গে দেখা। সে দৈবের খেলা। তুমিই আমাকে মানুষ করে দিয়েছিলে, তার দাম কিছুতেই শোধ হবে না। তুচ্ছ এই গয়নাগুলো।

বাঁশরী

 আমার শেষ কথাটা শোনো শংকর। আমার তখন প্রথম বয়েস, তুমি এসে পড়লে সেই নতুন-জাগা অরুণ রঙের দিগন্তে। ডাক দিয়ে আলোয় আনলে যাকে, তাকে লও বা না লও নিজে তো তাকে পেলুম। আত্মপরিচয় ঘটল।

৩১