পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারোগার দপ্তর, ১৬৬ সংখ্যা।

সম্প্রতি মেরামত করা হইয়াছে। দরজার পার্শ্বে দুই দুইটী নহবৎ বসিয়াছে। বাড়ীর চাকরেরা লাল রঙ্গের কাপড় পরিয়া চারিদিকে দৌড়াদৌড়ি করিতেছে। কতকগুলি লোক আলো জ্বালিতে ব্যস্ত, কেহ বা আপনাপন আত্মীয় স্বজনের আহারের যোগাড় দেখিতেছে। কেহ আবার এই সুবিধা পাইয়া কোন যুবতী দাসীর সহিত রসালাপ করিতেছে।

 দরজার সম্মুখে অনেক লোক জমায়েৎ হইয়াছিল। আমিও সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়াইয়া চারিদিকে লক্ষ্য করিতেছি, এমন সময় আমার পরিচিত একজন চাকরকে দেখিতে পাইলাম। তাহাকে দেখিয়া আমার মনে আশা হইল। আমি তাহাকে নিকটে ডাকিয়া অতি গোপনে সকল কথা প্রকাশ করিলাম।

 লোকটার নাম ভোলা, বড় বিশ্বাসী। এক সময়ে সে আমারই বাসায় চাকরি করিত। কিন্তু জমীদার মহাশয়ের নিকট অধিক বেতন পাইবে আশা করিয়া, আমায় জানাইয়া, সে চাকরি ত্যাগ করে। কিন্তু তখন কোথায় চাকরি করিবে, সে কথা তখন তাহাকে আমি জিজ্ঞাসা করি নাই।

 ভোলা নিকটে আসিলে আমি তাহাকে লইয়া এক নির্জন স্থানে যাইলাম। পরে জিজ্ঞাসা করিলাম, “ভোলা, আমায় চিনতে পারিস?”

 ভোলা হাসিয়া বলিল, “খুব পারি। আপনি যেমনই ছদ্মবেশ করুন না কেন, আমি আপনাকে নিশ্চয়ই চিনিতে পারি। আপনার নিকট এতকাল চাকরি করিয়াছি, আর আপনাকে ভুলিয়া যাইব! আমার নাম ভোলা বটে, কিন্তু আমি প্রায় কোন কথা ভুলি না।