পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br(չ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড মে মাসের মধ্যেই রাজাকার তৈরী করা হয়। এতে বহু ক্ষেত্রে জোরজবরদস্তি ও ভীতি প্রদর্শন করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে রাজাকার মোতায়েন করার কথা থাকলেও তাহিরপুর এবং থানা ছাড়া কোথাও মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতায় তারা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। ৩রা আশ্বিন রাতে রায়াপুরা গ্রামে হানা দিয়ে সরদার ওসমান আলী সাহেবের বাড়ী ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র লুটপাট করে এবং তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। আগুন লাগিয়ে দিতে থাকাকালে অন্য আর এক রাজাকারের কৃপায় বেঁচে যান। তাঁর পাটের গুদামে আগুন লাগিয়ে দেয়। এমনিভাবে থানার বিভিন্ন স্থানে লুটপাট করে। বেউকালীতেও অপারেশন করে লুটপাট করে, বেলসিংহেও লুটপাট চালায়। পাক মিলিটারীরা থানার বিভিন্ন স্থানে অপারেশন করে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ নরহত্যা ও নারী নির্যাতন করে। মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের খবর পেয়ে মিলিটারীরা ভবানীগঞ্জ অভিমুখে যাত্রা করে। আগষ্ট মাসের পরে কোনো এক সময়ের ঘটনা। সমস্ত ভবানীগঞ্জ বাজার লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ভবানীগঞ্জ গ্রামের বেশ কিছুসংখ্যক মহিলার উপর নির্যাতন চালায়। বলা প্রয়োজন উক্ত গ্রাম ধর্মভীরু গোঁড়া মুসলমান বসতিপূর্ণ। পক্ষান্তরে তারা প্রায় সকলেই পাকিস্তানী সমর্থক ছিল। তবুও খান সেনারা তাদের পাশবিক অত্যাচার করে। তারা উত্তর একডালা গ্রামের শাহ মুহম্মদ জাফর উল্লাহ এম. এন. এ-র বাড়ী সম্পূর্ণ ভস্মীভূত করে দেয়। খান সেনা ও রাজাকার দল হাজিরকুশলা গ্রামে সরদার আমজাদ হোসেনের বাড়ি অপারেশন করতে যাওয়ার পথে গোয়ালকান্দির নওমুসলিম পাড়া অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। বাগমারা থানায় রাজাকার ও আধা মিলিটারীদের ক্যাম্প ছিল তাহিরপুর, বাগমারা থানা এবং বালানগর মাদ্রাসা। উল্লিখিত স্থানে সমানে লোক করা হতো। জবাই করে, গুলি করে এবং বস্তায় পুরে পানিতে ফেলে দিয়ে লোক হত্যা করতো। বহুসংখ্যক লোক উক্ত তিন স্থানে তাদের হাতে পাশবিকভাবে মারা যায়। স্বাক্ষর/ ১৭/০৯/৭২