পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σοο বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড ধন-দৌলত লুট করার জন্য। পরের দিন সকালে খান সেনারা আমাকে সংগে করে শহরে চলে আসে। খানসেনারা আমাকে লুট করার কথা বলে। তখন আমি বলি যে, আমি লুট করব না বা আমার কোন প্রয়োজন নাই। এইভাবে তিন দিন কেটে গেল। খান সেনার চারজনের মধ্যে একজন ছিল মেজর জাকি। ৪র্থ দিনে তারা আমার বাসা ছেড়ে দিয়ে রংপুরে চলে যায়। পুনরায় মেজর শাকিরিয়া আমার বাসায় চলে আসে। এসে আমাকে বলে যে, তুমি এখান থেকে চলে যাও। এই বলে আমাকে সাথে করে সার্কিট হাউসে নিয়ে আসে। সেখানে গিয়ে আমি দেখতে পেলাম, রাজশাহী ভার্সিটি থেকে ধরে আনা কয়েকজন ছাত্রী। তারা বসে বসে কাঁদছে। পাক হায়েনারা তাদের উপর অমানুষিক পাশবিক অত্যাচার করে। তাদের সারা দেহে ধর্ষণের চিহ্ন বিদ্যমান। ঐ দৃশ্য দেখে আমি মর্মাহত ও অভিভূত হয়ে পড়ি। দুই ঘন্টা পর মেজর শাকিরি আমাকে নিজের বাসায় ফিরে যাবার অনুমতি দেয়। কোন রকমে আমি নিজের বাসায় ফিরে আসি।এর পরও মাঝে মাঝে খান সেনারা আমার বাসায় এসে তদন্ত চালায় এবং বলে যে, তুমি মুক্তিফৌজকা লিডার বা মুক্তিদের সর্বরকমের সাহায্য কর। আমি সম্পূর্ণ অস্বীকার করলে আমাকে দারুণ নির্যাতন ও প্রহার করে। দিনে-রাতে সব সময় আমার বাসায় এসে খান দসু্যরা অমানুষিক অত্যাচার করত। আমার দুই ছেলে মুক্তিযোদ্ধা ছিল বলে খান সেনারা সব সময় দুই ছেলেকে খুঁজে বেড়াত। এরপর আমার বাসায় একটানা এপ্রিলের ২০ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত অতিবাহিত করি। ১৪ই সেপ্টেম্বর তারিখে নিজ ছেলে-মেয়ে এবং পরিবার বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে আসি। এরপর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় বগুড়া শহর মুক্ত হয়ে যায়। বগুড়া শহর ও বাংলাদেশের জয়ের পতাকা উত্তোলিত হয়। স্বাক্ষর/মোঃ এলাহী বক্স