পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏՏ Ջ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড Il C II মোঃ আবুল কাসেম থানা- গাবতলী জেলা-বগুড়া ২৫শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনী বগুড়া শহরে আক্রমণ করে ব্যর্থ হলে অতঃপর ১৩ই এপ্রিল তারিখে ত্রিমুখী আক্রমণ ও বিমান আক্রমণ করে বগুড়া শহর তাদের আয়ত্তে নিয়ে আসে। অতঃপর কয়েক দিন পর এক দল খান সৈন্য গাবতলী থানায় চলে আসে। গাবতলীর সি, ও, অফিসে তারা ঘাঁটি স্থাপন করে। এরপর খান সেনারা চারিদিকে টহল দিতে থাকে। হঠাৎ করে একদল খান বর্বর বাহিনী সুখান পুকুর রেলষ্টেশনে এসে উপস্থিত হয়। পর পর বহু দোকান পাট ও বাসাবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। বাজারের অসংখ্য দোকানপাট ও বাসাবড়ীতে লুটপাট আরম্ভ করে দেয়। যাকে যে অবস্থায় যেখানে পায় খান হায়েনারা তাকে সেখানেই বেয়োনেট চার্জ করে অথবা রাইফেলেন গুলি দিয়ে হত্যা করে। এক সংগে ৭২ জন নিরীহ জনগণকে একত্রে দাঁড়া করে মেশিনগানের ব্রাশ ফায়ার মেরে হত্যা করে। গাবতলী থানার ভিতর সুখান পুকুরে এত গণহত্যার নজির আর কোথাও পাওয়া যায়নি। বাজারে ঢুকে সর্বপ্রথম কয়েকটি মালজাত গুদাম ঘরে তারা অগ্নিসংযোগ করে বহু টাকার ধান চাউল ভস্মীভূত করে দেয়। তাছাড়া বাজারের বহু দোকানদারকে ধরে ভীষণ নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে। এদিনই পাক সেনারা আমার বাড়ীতে গিয়ে আমার ঘর বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। পর পর খান সেনা ও রাজাকার মিলে আমার বাড়ীতে বহু টাকার ধনসম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। খান বর্বর বাহিনী আমার বাড়ী থেকে ৭/৮ হাজার টাকার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। বহু সংখ্যক হিন্দুর বাড়ী অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করে দেয়। গ্রামে ঢুকে মেয়েদের উপর পাশবিক অত্যাচার করে। বাজারের সমস্ত দোকান পাট ও ঘরবাড়ী অগ্নিসংযোগ করে পাক হায়েনারা আবার গাবতলী সি,ও, অফিসে যায়। গাবতলী থেকে খান পশুরা প্রত্যহ সুখান পুকুরে আসা যাওয়া করতে থাকে। প্রত্যেক বারই তারা দু’চারজনকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। স্বাধীনতার ১২/১৩ দিন পূর্বে মুক্তিবাহিনীর প্রবল আক্রমণে গাবতলী থানা তথা সুখান পুকুর শেষ বারের মত শত্রমুক্ত হয়। স্বাধীনতার পতাকা সর্বত্র উড়াতে থাকে। স্বাক্ষর/মোঃ আবুল কাসেম ২৫/৯/৭৩