পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

აჯ8 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l めのと l সামছুজ্জোহা আলমাজী শাহজাদপুর পাবনা ১৯৭১ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ৬/৭ জন রাজাকার আমাকে দিভার রোডে ধরে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং আমাকে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে আমার দুই হাত একত্রিত করে বাঁধে। তাপর রাজাকার কমাণ্ডার মজিবর রহমান আমাকে জিজ্ঞাসা করে তোমার কাছে কয়টা রাইফেল আছে? কয়টা গ্রেনেড আছে ও কয়টা হাত বোমা আছে এবং তুমি মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করো। এবং তাদের কাছে আমাদের গোপন খবরাখবর পাঠিয়ে দাও। আমি তার জবাবে উত্তর করি আমার কাছে দুইটা বন্দুক আছে তা আমার নিজস্ব এবং তার মধ্যে একটা থানায় জমা দেওয়া হয়েছে আর অন্যটা আমাদের বাসায় আছে। তারপর দুইজন রাজাকার এসে আমাকে কিল চড় ঘুষি মারতে থাকে। বেশ আধা ঘন্টা শারীরিক নির্যাতন চারানোর পর আমাকে একটা ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে দুইজন রাজাকার লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রহার করে। তারপর সন্ধ্যা হয়ে আসাতে তারা প্রহার করা বাদ দিয়ে উক্ত ঘরের মধ্যে একটা জানালার শিকের সাথে বেঁধে রেখে ঘরে একটা বাতি জেলে রেখে যায়। তার ১০/১৫ মিনিট পর একজন রাজাকার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেই বাতি নিভিয়ে দিয়ে যায়। তার ৫/৭ মিনিট পর এক এক করে ৪/৫ জন রাজাকার আমার উপর চড়, কিল, ঘুষি, লাথি ও লাঠি দিয়ে প্রহার করার পর তারা চলে যায়। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তার আধা ঘন্টা পর আমি জ্ঞান ফিরে পাই। পরদিন সকাল বেলা পাক সেনাদের দুটি গাড়ী রাজাকার ক্যাম্পে এসে পৌঁছে। এসেই আমাদেরকে হাত বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে পাক সেনারা রাজাকারদের সাথে আমাকে নিয়ে হাসি রহস্য করে। তারপর রাজাকার কমাণ্ডারের সাথে আলাপ-আলোচনা করার পর তাদের গাড়ীতে করে আমাকে ও আরও একজনকে উল্লাপাড়া নিয়ে যাবার সময় রাস্তায় পাক প্রহার করার সুযোগ সুবিধা পায় না। আমাকে উল্লাপাড়া নিয়ে গিয়ে একটা রুমের মধ্যে নিয়ে বন্দী অবস্থায় রেখে দেয়। রাত্রিতে ২/৩ জন পাক সেনা আমার নিকট যায় এবং লাথির পর লাথি দেবার পর আমাকে মেঝেতে শুইয়ে পাক সেনারা বুট পায়ে দিয়ে আমার বুকের উপরে উঠে পাড়াতে থাকে। এইভাবে ৪/৫ জন পাক সেনা আমার শরীরের উপর উঠলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর কখন যে তারা আমার উপর নির্যাতন করা বাদ দিয়েছে তা আর আমার স্মরণ নেই। রাত্রি দুইটার সময় আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে দেখতে পাই যে কোন লোক রুমের মধ্যে নেই। পর দিন সকালে হাবিলদার আমার সাথে দেখা করে।আমি তাকে আমার নির্যাতনের ঘটনার কথা খুলে বলি। তারপর সে ক্যাম্পেনকে সাথে করে আমার রুমে আসে এবং আমার শরীরে শত শত প্ৰহারের দাগ দেখে তার সিপাহীদেরকে শাসিয়ে দেয় এবং আমার উপর যেন কোন অত্যাচার বা নির্যাতন না করা হয় তাও বলে দেয়। তারপর ক্যাপ্টেন নির্দেশে একজন ডাক্তার ঔষধ পাতি নিয়ে আমার রুমে ঢোকেন এবং আমার শরীর পরীক্ষা করার পর কয়েকটা এনজেকশান দিয়ে ও কিছু মালিশ দিয়ে যান। তারপর আমি ঐগুলি ব্যবহার করতে থাকি। তারপর হতে আমার উপর শারীরিক কোন নির্যাতন করা হয় না। তিন দিনের দিন একজন হাবিলদার আমার নিকট যায় এবং আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আপনার নিকট রাইফেল নাই, গ্রেনেড নাই, তার জবাবে আমি না বলতে সে চলে যায়। তার কিছু দিন পর আমাকে বন্দীশালা হতে বের করে বাইরে নিয়ে যায়। সেই দিন শাহজাদপুর হতে একজন লোককে ধরে নিয়ে যায়। ক্যাপ্টেন খালেক আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করে, বাবলু এই লোকটাকে