পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ ՆԳ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড I めのbr l মৌলভী মোঃ বছির উদ্দিন আহমেদ গ্রাম-বড় মনোহারা পোষ্ট- দুর্গানগর জেলা- পাবনা একদিন (জুলাই মাসে) উল্লাপাড়া রেল ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় একজন রাজাকার ও ৭/৮ জন পাক আর্মি আমাকে ধরে ফেলে এবং বলে যে আমি ভণ্ড ধাৰ্মিক, আমি “মুক্তিকা স্পাই’। আমাকে প্রথমে উল্লাপাড়া মিলিটারী ক্যাম্পে নিয়ে যায় সেখানে আমাকে প্রথমে জিজ্ঞাসা করে যে তুমি কাকে ভোট দিয়েছ কাকে? তার উত্তরে আমি বলি যে “নৌকায়”। এই সময় আমাকে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলার জন্য বলে কিন্তু উত্তর দেইনি। তা বলি না। আমার মুখে একই বুলি ছিল যে “যা হবার তা হয়ে যাবে আল্লাহ’ যোর তখন পাক বর্বর বাহিনী আমার হাত পিছনে বেঁধে দুই পা বেঁধে উল্টো করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। এবং চাবুক দ্বারা প্রহার করতে থাকে। কিন্তু আমার মুখে ঐ এক কথা। দুদিন পর আমাকে সিরাজগঞ্জ নিয় যায়। সেখানে আমার দাড়ি-চুল ছোট করে দেওয়া হয়। আমাকে দিয়ে সিমেন্টের বস্তা টানায়। এই সময় আমাকে নামাজ পড়তে দিন না। তারা নিয়মিত ভাবে প্রহার করত, ফলে আমার পিঠে তিনটা বড় রকমের গর্ত হয়ে যায়। আমি ভীষণ ভাবে কাতর হয়ে পড়ি, তবুও আমাকে রেহাই দেওয়া হত না। আমার মুখে চুন ও কালি মেখে রাজাকাররা শহরের মধ্যে ঘুরতো। আমার কপালের উপর খাপড়া রেখে সূয্যের দিকে মুখ করে দাঁড় করিয়ে রাখতো। এই সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতো। ১৫ দিন পর একটা মেজর এসে আমাকে বলে যে আমি আপনাকে বহুদিন আগে থেকেই চিনি। আপনি যে একটা “দরবেশ” লোক তাও আমি জানি। কিন্তু এরা আপনাকে না জেনে ধরে এনেছে এবং মারধর করেছে। তার জন্য আমি দুঃখিত। আমরা খাঁটি মুসলমানদের উপর কোনরূপ অত্যাচার করব না। আমরা শুধু কাফের ও হিন্দুকে মারব। এই বলে আমাকে ছেড়ে দেয় ও সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সাক্ষর/