পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૭ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড լլ ՖbrՆ, լ মোঃ জহুরুল ইসলাম গ্রাম-কবুরহাট থানা ও জেলা-কুষ্টিয়া ১৯৭১ সালের ৯ই আগষ্ট আমি সদর হাসপাতালে ঔষদের জন্য যাই। হাসপাতালে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ২০/৩০ জন বিহারী ও জাতীয় মিলিসিয়া এসে আমাকে ঘিরে নিয়ে ধরে ফেলে। তারপর আমার দুহাত একসঙ্গে বেঁধে ভীষন প্রহার শুরু করে এবং জিজ্ঞাসা করে তোম লোক কেতনা মিলিটারী মারা? তোম লোক কেতনা বিহারী মারা? সাচ্চা বলেগা তো ছোড় দেগা। তোম ঝুট বলেগা তো খতম কর দেয়া। আমি তাদের কথা অস্বীকার করি। তখন আমাকে শোয়ায়ে আমার বুকের উপর ৩/৪ জন মিলিটারী উঠে খচতে থাকে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। তারপর ৫/৭ জন বিহার এসে আবার মারতে মারতে হাউজিং অফিসে নিয়ে যায় এবং সেখানে নিয়ে গিয়ে আমার চোখ বাঁধবে, এমন সময় ও, সি সেখানে চলে আসে এবং আমাকে জিজ্ঞেস করে তোমার বাড়ীতে কয়টা বন্দুক আছে এবং তুমি কয়টা মিলিটারী ও কয়টা বিহারী মেরেছ? আমি উত্তর করি আমি কোন বিহারী ও কোন মিলিটারী মারি নাই এবং আমার বাড়ীতে কোন বন্দুক নাই। তখন ও,সি আমাকে তার হাতে যে রুলার ছিল সেই রুলার দিয়ে আমার পিঠে ১০/১২টা বাড়ীও ঘা মারে। থানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একটা বদ্ধ ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে রেখে দেয়। তার পরদিন বেলা চারটার সময় তিনজন মিলিসিয়া ও,সি,-এর অফিসে আমাকে নিয়ে হাজির করে। সে দিনও ও সি আমাকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো। আমি অস্বীকার করাতে সে দিনও ও,সি আমাকে লাঠি দিয়ে ভীষণ প্রহার করে। মারার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আমি একটু পানি চাইলে ওসি একটা মিলিসিয়াকে এক গ্লাস পানি এনে দিতে বলে। তারপর মিলিসিয়াটি আমার জন্য এক গ্রাস পানি নিয়ে আসে। আমি পানিটুকু খাবার পর আবার আমাকে নিয়ে সেই ঘরে রেখে দেয়। আমি তখন জেলা বোর্ডে চাকুরী করতাম। জেলা প্রশাসক আমার ধরা পড়ার খবর পেয়ে আমাকে মুক্ত করার জন্য থানার ও.সি.-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার চেষ্টায় আমাকে ৫ দিন পর রাত্রি ৪টার সময় বদ্ধ ঘর হতে বের করে ও.সি.-এর সামনে হাজির করে। ও,সি, আমার ঠিকানা লিখে নিয়ে আমাকে মুক্তি দেয় আমি সেই দিনই একটি রিকসায় বাড়ী পৌছি। উল্লেখ্য যে থানার ও.সি ছিল বিহারী। টিপসহি ঃ জহুরুল ইসলাম