পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৭ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড |լ Ֆb- Գ լ মোঃ আব্দুল রশীদ মণ্ডল গ্রাম- নওপাড়া জেলা- কুষ্টিয়া আষাঢ় মাসের ২৫ তারিখে বেলা তিনটার সময় এক ট্রাক মিলিটারী রাজাকার মিলে প্রায় ১০০ জন আমার বাড়ী ঘিরে ফেলে। আমি তখন নওয়াপাড়া স্কুলে বিশ্রাম করছিলাম। এমন সময় কয়েকজন মিলিটারী স্কুলের ভিতর ঢুকে আমাকে ধরে ফেলে এবং বন্দুকের বট দিয়ে ভীষন প্রহার করতে থাকে। তারপর তাদের গাড়ীতে করে মীরপুর থানা শান্তি কমিটিতে নিয়ে যায়। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নাম চুনু চৌধুরী। আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চুনু চৌধুরী আমাকে বললো-যাও, ডাক্তারের ঔষধপত্র ভারতে পাঠাওগে। ডাক্তার সাহেবের ছেলে সুফি ছাত্রলীগ কর্মী ছিল। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নির্দেশ দিলেন আমাকে কেলুগড়া রাস্তার পার্শ্বে গুলি করে মারা হবে। কিন্তু ক্যাপ্টেন আমকে না মেরে কুষ্টিয়া পাক হানাদারদের ঘাঁটিতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে। বেত ও লোহার রড দিয়ে ভীষন প্রহার করার পর একটা ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে রেখে দেয়। আমি ঘরে ঢুকেই দেখতে পাই ঘরের মধ্যে আরও ছয়জন লোক। পরদিন চারটার সময় আমাদেরকে ঘর হতে বের করে আবার বেত, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে প্রহার করে, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার পর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তিন ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে পাই। আমার সমস্ত শরীর মারের চোটে ক্ষতবিক্ষত হয়ে বিভিন্ন জায়গা ফেটে রক্ত ঝরছিল। আমি ব্যথার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে চিৎকার করতে লাগলাম। আমি একটু পানি চাইলে আমাকে পানি না দিয়ে প্রশ্রাব এনে দিত। তিন দিন পর আমাকে মেজরের নিকট নিয়ে যায়। মেজর আমাকে দেখে তখনই তার স্টাফকে নির্দেশ দিল এ লোকটাকে এখনই হাসপাতালে ভর্তি কর। তারা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সেখানে দু’মাস চিকিৎসা করার পর আমাকে মেজরের আদেশে কুষ্টিয়া জেলে পাঠিয়ে দেয়। থানার দারোগাকে চার হাজার টাকা দেবার পর দারোগা আমার অনুকূলে রিপোর্ট মেজরের নিকট পাঠায় এবং আমাকে নির্দোষী খালাস করে দেয়। টিপসহি মোঃ আব্দুল রশীদ মণ্ডল