পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S○と বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l めb8 l মোঃ দিয়ানত আলী খান গ্রমি- মালি গ্রাম জেলা- কুষ্টিয়া ১৩৮৮ সালের ১লা শ্রাবণ শনিবার রাত্রি ৯টার সময় প্রায় ৩০/৪০ জন মিলিটারী, মুজাহিদ, রাজাকার ও বিহারী মিলিয়া আমার বাড়ী ঘেরাও করে এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করে আপনার ছেলে আলাউদ্দিন কোথায়? তার প্রতি উত্তরে আমি বলি কোথায় বলিতে পারিব না। তখন তাহারা আমাকে এবং আমার মেঝ ছেলেকে ধরিয়া রাত্রি সাড়ে বারটার ট্রেনে কুষ্টিয়া নিয়া যায় এবং সেখানে হাজতে রাখিয়া দেয়। তার পরদিন হাজত হইতে বাহির করিয়া মেজরের সামনে হাজির করে। মেজর আমাকে জিজ্ঞাসা করে আপনার ছেলে আলাউদ্দিন কোথায়? তাহাকে যদি আনিয়া দিতে পারেন আপনাকে ছাড়িয়া দিব। আমি মেজরের কথা প্রত্যাখান করি। তখন মেজরের আদেশে আমাদেরকে তাদের ক্যাম্পের দোতালায় নিয়া যায় এবং সেখানে আমাদের সঙ্গে আরও তিনজন ছিল। তার ঘণ্টা খানেক পর একজন মিলিটারী সেই ঘরের দরজা খুলিয়া ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া আমার ছেলেকে কারেন্টের তারের সঙ্গে দুই পা ঠেকাইয়া দেয় এবং বেতের লাঠি দিয়া ভীষন প্রহার করে। তারপর আমার অনুরোধে তাকে মারা বন্ধ করিয়া আমাদের সঙ্গে যে আর তিনজন ছিল তাদেরকে মারার পর তাহারা যখন অজ্ঞান হইয়া যায় তখন মারা বন্ধ করিয়া দিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করিয়া চলিয়া যায়। সন্ধ্যার পর আমাকে এবং আমার ছেলেকে মেজরের নিকট নিয়া হাজির করে। মেজর সেই একই প্রশ্ন বার বার জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু আমি অস্বীকার করি। তারপর আমাদের থানার হাজতে পাঠাইয়া দিল। সেখানে ৪/৫ দিন থাকার পর আবার জেলে পাঠাইয়া দেয়। এর মধ্যে ডাঃ মালিক পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হইয়া ঘোষনা করে যাহাদেরকে সন্দেহ করিয়া ধরিয়া আনিয়া হাজতে রাখা হইয়াছে তাহাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাড়িয়া দেওয়া হউক। আমরা কুষ্টিয়া জেলে মোট ১০১ জন আসামী ছিলাম। তাহার মধ্যে মোট ৪৭ জনকে ছাড়িয়া দেয়। আমরাও ঐ ৪৭ জনের সঙ্গে মুক্তি পাই। আমাকে এবং আমার ছেলেকে মোট ১ মাস ২২ দিন জেলে রাখে। স্বাক্ষর/মোঃ দিয়ানত আলী খান