পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S○° বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l め冷)○ ll গৌরাঙ্গ বিশ্বাস গ্রাম- নারায়াণপুর থানা- খোকসা ১৯৭১-এর ২৩শে মে রবিবার পাক-বাহিনীর ভয়ে ভারতের দিকে যাত্রা করি। পাক-বাহিনী রবিবারে জানিপুরে এসে আশ্রয় নেয়। রবিবার পরিবারসহ খোকসা থানার অধীনে বাহরামপুরের মাঠে একটা আম আসার পথে কমলাপুর খালের মধ্যে পাক-বাহিনীর সাথে দেখা হয়। পাক-বাহিনী রাজাকার ও শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানসহ গ্রাম অপারেশনে যাচ্ছিল। পাক-বাহিনী আমাদের দু’জনকে আনতে বলে তখন আমরা পালাবার সুযোগ না পেয়ে থেমে যাই। পাকবাহিনী শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করে এরা আদাব দিলো কেন। চেয়ারম্যান বলে যে এরা দু’জন মালাউন। অমিয় কুমারের (সি, ও অফিসের কেরানী, খোকসা) খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। মালাউনের কথা শুনে পাক বাহিনী আমাদের বলে যে টাকা পয়সা যা আছে তা দিয়ে দাও। আমরা টাকা পয়সা সোনাদানা দিয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলাম। কথা সর্বস্ব দিয়ে দিলাম। তখন পাক-বাহিনী আমাদের হাত বেঁধে ফেললো। কমলাপুরের ব্রীজের পাশে রাস্তার ধারে লাইন করে দাঁড় করিয়ে দেয় এবং গুলি করে। অমিয় কুমার তার শিশুদের জন্য অসহায়ের মতো তাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চেয়ে ব্যর্থ হলো। গুলি হলে অমিয় কুমারের বক্ষ ভেদ করে আমার মাথায় লাগে। অমিয় কুমার নিহত হয় আর অমিয় কুমারের চিৎকার ও পাক বাহিনীর বীভৎস হাসি শুনে এবং জীবনের কথা চিন্তা করে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। মাথা দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। দুদিন ঐ রাস্তার ধারে খালে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকি। দুদিন পর আফতাব মুন্সির ছেলেরা খাল হতে পাশে পানের বরজে আশ্রয় দেয়। সেখানে আমাকে চিকিৎসা করেন। ডাক্তারের চিকিৎসার সুযোগ ছিলো না। কারণ পাক-বাহিনী বা দালালের কানে পৌছালে তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতো। আফতাব মুন্সির বাড়ীতে বা তার অধীনে দীর্ঘ আড়াই মাস চিকিৎসা হবার পর সুস্থ হলে ভারতে চলে যাই। স্বাক্ষর/