পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৯ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড |լ ՖԵ Գ լ ইমদাদুল হক মজুমদার অধ্যক্ষ, ব্ৰজমোহন কলেজ বরিশাল প্রতিরাতে পাক বাহিনী অংসখ্য লোককে হত্যা করেছে। দিনের বেলায় ট্রাক ভৰ্ত্তি করে লোক ধরে আনতো। প্রথম দিকে গুলি করে হত্যা করতো। পরের দিকে জবাই করেছে। অসংখ্য লাশ নদীতে ভাসতে দেখেছি। বেয়োনেট দিয়ে পেট চিড়ে ফেলে রাখতো। আমরা ধারণা ৭৫০০০ মত লোককে পাক বাহিনীরা হত্যা করেছে সমস্ত বরিশালে। পাথরহাটা, বাওয়াল (পটুয়াখালী সীমান্তে) নামক স্থানে পাক সেনারা গেলে লোকজন সব দেখতে আসে। লোকজন তখন ভাবতো মুসলমান হলে মারবে না। পাক সেনারা সবাইকে একত্র করে দুর্বল লোকদের ছেড়ে শক্ত সমর্থ লোকদের পুকুরে নেমে সাঁতার কাটতে বলে। সবাই সাঁতার কাটা শুরু করলে এক এক করে গুলি করে হত্যা করে, তামাশা দেখে। ইয়াহিয়ার সাধারণ ক্ষমা দেওয়ায় অনেকেই বাইরে বেরোয়। নজরুল, আলমগীর, হাই, শাহাবুদ্দিন (তপন) এরা স্বাধীনতা সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়েছিলো। বাইরে বেরোলে পাক সেনারা তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ংখ্য মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে এই শহরে। পাক সেনারা খবর পেয়ে রাত্রে গিয়ে মেয়েদের ধরে নিয়ে আসতো এবং অত্যাচার চালাতো। বাড়ী বাড়ী ঢুকে লুট করে সব ধ্বংস করেছে জুলিয়েছে অসংখ্য বাড়ী ঘর। বরিশাল মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা এবং তার সাথে আর একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রিকে অস্ত্রসহ পাক বাহিনীরা গৌরনদী অথবা উজিরপুর এলাকার কোন একটি বাংকার থেকে ধরে আনে। বহু অত্যাচার চালায় ওদের উপর তথ্য নেবার জন্য। কিন্তু কোন কথা বের করতে পারেনি। পরে ওদেরকে হত্যা করে। মেয়ে দুজন বলেছে তোমরা হত্যা করো কিন্তু কোন কথা পাবে না। অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে কিন্তু কোন কথা বের করতে পারেনি। বাড়ী বাড়ী থেকে পাক সেনারা ছাগল, ডিম, এসব নিয়ে আসতো জোর করে। আমার কাছে মুক্তি বাহিনীরা আসতো তাদের জামা কাপড়, খাওয়া এবং বিভিন্ন খবর নিয়মিত দিতাম। স্বাক্ষর/ইমদাদুল হক মজুমদার ২৩/৮/৭৩