পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খণ্ড
২৪৪

হয়ে গেলে বস্তাবন্দী করে তারপর বেয়োনেট চার্জ করে নদীর ভিতর ফেলে দিত। অনেককে আবার জীপ গাড়ীর পিছনের দিকে বেধেঁ সারা শহরের মধ্যে টানতো। এর ফলে সমস্ত মাংস শরীর থেকে পড়ে যেত। আমি এ সব ঘটনা নিজ চোখে দেখেছি। প্রত্যেক দিন আমাকে হাজত থেকে বার করে ক্যাণ্টনমেণ্টের সম্মুখে একটা বাদাম গাছের সঙ্গে

কপি কল দিয়ে পা উল্টো দিকে বেঁধে ঝুলিয়ে দিত এবং ভীসণভাবে প্রহার করতো।

 মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমি জেটি ঘাটে ২০০০ হাজার লাশ নিজের চোখে দেখেছি। প্রত্যেক দিন আমি ভোর বেলা ঘাটে গিয়ে যে সব লাশ পড়ে থাকতো তাদের উলটিয়ে পালটিয়ে দেখতাম এবং চেনা শোন হলে তার বাড়ীতে গিয়ে খবর দিতাম।

 আমি নিজের চোখে মানুষকে কুপিয়ে, রাস্তায় টেনে, বস্তাবন্দী করে বেয়োনেট চার্জ করে এবং গুলি করে মারতে দেখেছি।

পাক বাহিনীর চেয়ে রাজাকার, শান্তি কমিটির মেম্বার এরা অত্যাচার বেশী চালিয়েছে। পাক বাহিনী যাদেরকে ছেড়ে দিতো দালালরা তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করতো। পিরোজপুর জেটি ঘাটে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩/৪ হাজার লোককে হত্যা করেছে। কত নারীকে যে ধর্ষণ করেছে তার কোনো হিসাব নাই।

স্বাক্ষর/-

উপেন্দ্রনাথ দত্ত

১৮/৮/৭৩